অতঃপর যখন তোমরা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করিবে তখন আল্লাহ্কে এমনভাবে স্মরণ করিবে যেমন তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষগণকে স্মরণ করিতে, অথবা তদপেক্ষা অভিনিবেশ সহকারে। মানুষের মধ্যে যাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালেই দাও’, বস্তুত পরকালে তাহাদের জন্য কোন অংশ নাই। (২:২০০)
জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করিবে। কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দেওয়া হইবে। যাহাকে অগ্নি হইতে দূরে রাখা হইবে এবং জান্নাতে দাখিল করা হইবে সে-ই সফলকাম এবং পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়। (৩:১৮৫)
যাহারা কুফরী করিয়াছে, দেশে দেশে তাহাদের অবাধ বিচরণ যেন কিছুতেই তোমাকে বিভ্রান্ত না করে। (৩:১৯৬)
ইহা স্বল্পকালীন ভোগমাত্র; অতঃপর জাহান্নাম তাহাদের আবাস; আর উহা কত নিকৃষ্ট ঠিকানা! (৩:১৯৭)
কেহ দুনিয়ার পুরস্কার চাহিলে তবে আল্লাহ্র নিকট দুনিয়া ও আখিরাতে পুরস্কার রহিয়াছে। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (৪:১৩৪)
পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত আর কিছুই নয় এবং যাহারা তাক্ওয়া অবলম্বন করে তাহাদের জন্য আখিরাতের আবাসই শ্রেয়; তোমরা কি অনুধাবন কর না? (৬:৩২)
যাহারা তাহাদের দীনকে ক্রীড়া-কৌতুকরূপে গ্রহণ করে এবং পার্থিব জীবন যাহাদেরকে প্রতারিত করে তুমি তাহাদের সঙ্গ বর্জন কর এবং ইহা দ্বারা তাহাদেরকে উপদেশ দাও, যাহাতে কেহ নিজ কৃতকর্মের জন্য ধ্বংস না হয়, যখন আল্লাহ্ ব্যতীত তাহার কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী থাকিবে না এবং বিনিময়ে সব কিছু দিলেও তাহা গৃহীত হইবে না। ইহারাই নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ধ্বংস হইবে; কুফরীহেতু ইহাদের জন্য রহিয়াছে অত্যুষ্ণ পানীয় ও মর্মন্তুদ শাস্তি। (৬:৭০)
হে মু’মিনগণ! তোমাদের কী হইল যে, তোমাদেরকে যখন আল্লাহ্র পথে অভিযানে বাহির হইতে বলা হয় তখন তোমরা ভারাক্রান্ত হইয়া ভূতলে ঝুঁকিয়া পড়? তোমরা কি আখিরাতের পরিবর্তে পার্থিব জীবনে পরিতুষ্ট হইয়াছ? আখিরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনের ভোগের উপকরণ তো অকিঞ্চিৎকর! (৯:৩৮)
সুতরাং উহাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাকে যেন বিমুগ্ধ না করে; আল্লাহ্ তো উহার দ্বারাই উহাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান; উহারা কাফির থাকা অবস্থায় উহাদের আত্মা দেহত্যাগ করিবে। (৯:৮৫)
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মু’মিনদের নিকট হইতে তাহাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করিয়া লইয়াছেন, তাহাদের জন্য জান্নাত আছে ইহার বিনিময়ে। তাহারা আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ করে, নিধন করে ও নিহত হয়। তাওরাত, ইনজীল ও কুরআনে এই সম্পর্কে তাহাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রহিয়াছে। নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহ্ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতর কে আছে? তোমরা যে সওদা করিয়াছ সেই সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং উহাই তো মহাসাফল্য। (৯:১১১)
যাহারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের চেয়ে ভালবাসে, মানুষকে নিবৃত্ত করে আল্লাহ্র পথ হইতে এবং আল্লাহ্র পথ বক্র করিতে চাহে; উহারাই তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রহিয়াছে। (১৪:৩)
আমি তাহাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়াছি, তাহার প্রতি তুমি কখনও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করিও না। তাহাদের জন্য তুমি দুঃখ করিও না; তুমি মু’মিনদের জন্য তোমার পক্ষপুট অবনমিত কর, (১৫:৮৮)
ইহা এইজন্য যে, তাহারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য দেয় এবং আল্লাহ্ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না। (১৬:১০৭)
কেহ আশু সুখ-সম্ভোগ কামনা করিলে আমি যাহাকে যাহা ইচ্ছা এইখানেই সত্বর দিয়া থাকি; পরে উহার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত করি যেখানে সে প্রবেশ করিবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ হইতে দূরীকৃত অবস্থায়। (১৭:১৮)
তুমি নিজেকে ধৈর্য সহকারে রাখিবে উহাদেরই সংসর্গে যাহারা সকাল ও সন্ধ্যায় আহ্বান করে উহাদের প্রতিপালককে তাঁহার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা করিয়া উহাদের হইতে তোমার দৃষ্টি ফিরাইয়া লইও না। তুমি তাহার আনুগত্য করিও না-যাহার চিত্তকে আমি আমার স্মরণে অমনোযোগী করিয়া দিয়াছি, যে তাহার খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে ও যাহার কার্যকলাপ সীমা অতিক্রম করে। (১৮:২৮)
উহাদের নিকট পেশ কর উপমা পার্থিব জীবনের: ইহা পানির ন্যায় যাহা আমি বর্ষণ করি আকাশ হইতে, যদ্দ্বারা ভূমিজ উদ্ভিদ ঘন-সন্নিবিষ্ট হইয়া উদ্গত হয়, অতঃপর উহা বিশুষ্ক হইয়া এমন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস উহাকে উড়াইয়া লইয়া যায়। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে শক্তিমান। (১৮:৪৫)
ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা; এবং স্থায়ী সৎকর্ম তোমার প্রতিপালকের নিকট পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য শ্রেষ্ঠ এবং কাঙ্ক্ষিত হিসাবেও উৎকৃষ্ট। (১৮:৪৬)
তুমি তোমার চক্ষুদ্বয় কখনও প্রসারিত করিও না উহার প্রতি, যাহা আমি তাহাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে পার্থিব জীবনের সৌন্দর্যস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসাবে দিয়াছি, তদ্দ্বারা তাহাদেরকে পরীক্ষা করিবার জন্য। তোমার প্রতিপালক-প্রদত্ত জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী। (২০:১৩১)
এই পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পারলৌকিক জীবনই তো প্রকৃত জীবন, যদি উহারা জানিত! (২৯:৬৪)
হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ভয় কর এবং ভয় কর সেই দিনের, যখন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসিবে না, সন্তানও কোন উপকারে আসিবে না তাহার পিতার। আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য; সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক যেন তোমাদেরকে কিছুতেই আল্লাহ্ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে। (৩১:৩৩)
তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যাহা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করিয়া দিবে; তবে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই তাহাদের কর্মের জন্য পাইবে বহুগুণ পুরস্কার; আর তাহারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকিবে। (৩৪:৩৭)
হে মানুষ! নিশ্চয়ই আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য; সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক যেন কিছুতেই আল্লাহ্ সম্পর্কে তোমাদেরকে প্রবঞ্চিত না করে। (৩৫:৫)
মানুষের যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে একনিষ্ঠভাবে তাহার প্রতিপালককে ডাকে। পরে যখন তিনি তাহার প্রতি অনুগ্রহ করেন তখন সে বিস্মৃত হইয়া যায়, তাহার পূর্বে যাহার জন্য সে ডাকিয়াছিল তাঁহাকে এবং সে আল্লাহ্র সমকক্ষ দাঁড় করায়, অপরকে তাঁহার পথ হইতে বিভ্রান্ত করিবার জন্য। বল, ‘কুফরীর জীবন অবস্থায় তুমি কিছুকাল উপভোগ করিয়া নাও। বস্তুত তুমি জাহান্নামীদের অন্যতম।’ (৩৯:৮)
কেবল কাফিররাই আল্লাহ্র নিদর্শন সম্বন্ধে বিতর্ক করে; সুতরাং দেশে দেশে তাহাদের অবাধ বিচরণ যেন তোমাকে বিভ্রান্ত না করে। (৪০:৪)
যে কেহ আখিরাতের ফসল কামনা করে তাহার জন্য আমি তাহার ফসল বর্ধিত করিয়া দেই এবং যে কেহ দুনিয়ার ফসল কামনা করে আমি তাহাকে উহারই কিছু দেই, আখিরাতে তাহার জন্য কিছুই থাকিবে না। (৪২:২০)
পার্থিব জীবন তো কেবল ক্রীড়া-কৌতুক, যদি তোমরা ঈমান আন, তাকওয়া অবলম্বন কর, আল্লাহ্ তোমাদেরকে তোমাদের পুরস্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চান না। (৪৭:৩৬)
অতএব যে আমার স্মরণে বিমুখ তুমি তাহাকে উপেক্ষা করিয়া চল; সে তো কেবল পার্থিব জীবনই কামনা করে। (৫৩:২৯)
উহাদের জ্ঞানের দৌড় এই পর্যন্ত। তোমার প্রতিপালকই ভাল জানেন কে তাঁহার পথ হইতে বিচ্যুত, তিনিই ভাল জানেন কে সৎপথপ্রাপ্ত। (৫৩:৩০)
তোমরা জানিয়া রাখ, পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া-কৌতুক, জাঁকজমক, পারস্পরিক শ্লাঘা, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছু নয়। উহার উপমা বৃষ্টি, যদ্দ্বারা উৎপন্ন শস্য-সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর উহা শুকাইয়া যায়, ফলে তুমি উহা পীতবর্ণ দেখিতে পাও, অবশেষে উহা খড়-কুটায় পরিণত হয়। পরকালে রহিয়াছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহ্র ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। পার্থিব জীবন প্রতারণার সামগ্রী ব্যতীত কিছুই নয়। (৫৭:২০)
‘হে মু’মিনগণ! তোমাদের ঐশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহ্র স্মরণে উদাসীন না করে, যাহারা উদাসীন হইবে তাহারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। (৬৩:৯)
তোমাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তো পরীক্ষাবিশেষ; আর আল্লাহ্, তাঁহারই নিকট রহিয়াছে মহাপুরস্কার। (৬৪:১৫)
কিন্তু তোমরা পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দাও, (৮৭:১৬)
অথচ আখিরাতই উৎকৃষ্টতর এবং স্থায়ী। (৮৭:১৭)
ইহা তো আছে পূর্ববর্তী গ্রন্থে- (৮৭:১৮)
ইব্রাহীম ও মূসার গ্রন্থে। (৮৭:১৯)
না, কখনও নয়। বরং তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না, (৮৯:১৭)
এবং তোমরা অভাবগ্রস্তদেরকে খাদ্যদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না, (৮৯:১৮)
এবং তোমরা উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ সম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ করিয়া ফেল, (৮৯:১৯)
এবং তোমরা ধনসম্পদ অতিশয় ভালবাস; (৮৯:২০)
আমি তো মালিক পরলোকের ও ইহলোকের। (৯২:১৩)
প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন রাখে। (১০২:১)
যতক্ষণ না তোমরা কবরে উপনীত হও। (১০২:২)
ইহা সংগত নয়, তোমরা শীঘ্রই ইহা জানিতে পারিবে; (১০২:৩)
আবার বলি, ইহা সংগত নয়, তোমরা শীঘ্রই ইহা জানিতে পারিবে। (১০২:৪)
সাবধান! তোমাদের নিশ্চিত জ্ঞান থাকিলে অবশ্যই তোমরা মোহাচ্ছন্ন হইতে না। (১০২:৫)