তাহারা জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে বল, এই প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হইবে?’ (৩৪:২৯)
বল, ‘তোমাদের জন্য আছে এক নির্ধারিত দিবস, যাহা তোমরা মুহূর্তকাল বিলম্বিত করিতে পারিবে না, আর ত্বরান্বিতও করিতে পারিবে না।’ (৩৪:৩০)
কাফিররা বলে, ‘আমরা এই কুরআনে কখনও বিশ্বাস করিব না, ইহার পূর্ববর্তী কিতাবসমূহেও নয়। হায়! তুমি যদি দেখিতে জালিমদেরকে যখন তাহাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দন্ডায়মান করা হইবে তখন উহারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করিতে থাকিবে, যাহাদেরকে দুর্বল মনে করা হইত তাহারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলিবে, ‘তোমরা না থাকিলে আমরা অবশ্যই মু’মিন হইতাম।’ (৩৪:৩১)
যাহারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তাহারা, যাহাদেরকে দুর্বল মনে করা হইত তাহাদেরকে বলিবে, ‘তোমাদের নিকট সৎপথের দিশা আসিবার পর আমরা কি তোমাদেরকে উহা হইতে নিবৃত্ত করিয়াছিলাম? বস্তুত তোমরাই তো ছিলে অপরাধী।’ (৩৪:৩২)
যাহাদেরকে দুর্বল মনে করা হইত তাহারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলিবে, ‘প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবারাত্র চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়াছিলে যেন আমরা আল্লাহ্কে অমান্য করি এবং তাঁহার শরীক স্থাপন করি।’ যখন তাহারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে তখন তাহারা অনুতাপ গোপন রাখিবে এবং আমি কাফিরদের গলদেশে শৃংখল পরাইব। উহাদেরকে উহারা যাহা করিত তাহারই প্রতিফল দেওয়া হইবে। (৩৪:৩৩)
যখনই আমি কোন জনপদে সতর্ককারী প্রেরণ করিয়াছি উহার বিত্তশালী অধিবাসীরা বলিয়াছে, ‘তোমরা যাহাসহ প্রেরিত হইয়াছ আমরা তাহা প্রত্যাখ্যান করি।’ (৩৪:৩৪)
উহারা আরও বলিত, ‘আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধিশালী; সুতরাং আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেওয়া হইবে না।’ (৩৪:৩৫)
বল, ‘আমার প্রতিপালক যাহার প্রতি ইচ্ছা তাহার রিযিক বর্ধিত করেন অথবা সীমিত করেন; কিন্তু অধিকাংশ লোকই ইহা জানে না।’ (৩৪:৩৬)
ইহাদের নিকট যখন আমার সু্স্পষ্ট আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন ইহারা বলে, ‘তোমাদের পূর্বপুরুষ যাহার ‘ইবাদত করিত এই ব্যক্তিই তো তাহার ‘ইবাদতে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়।’ ইহারা আরও বলে, ‘ইহা তো মিথ্যা উদ্ভাবন ব্যতীত কিছু নয়,’ এবং কাফিরদের নিকট যখন সত্য আসে তখন উহারা বলে, ‘ইহা তো এক সু্স্পষ্ট জাদু।’ (৩৪:৪৩)
ফিরিশ্তাদেরকে বলা হইবে, ‘একত্র কর জালিম ও উহাদের সহচরগণকে এবং উহাদেরকে যাহাদের ‘ইবাদত করিত তাহারা- (৩৭:২২)
আল্লাহ্র পরিবর্তে এবং উহাদেরকে পরিচালিত কর জাহান্নামের পথে, (৩৭:২৩)
‘অতঃপর উহাদেরকে থামাও, কারণ উহাদেরকে প্রশ্ন করা হইবে: (৩৭:২৪)
‘তোমাদের কী হইল যে, তোমরা একে অপরের সাহায্য করিতেছ না?’ (৩৭:২৫)
বস্তুত সেই দিন উহারা আত্মসমর্পণ করিবে (৩৭:২৬)
এবং উহারা একে অপরের সামনাসামনি হইয়া জিজ্ঞাসাবাদ করিবে- (৩৭:২৭)
উহারা বলিবে, ‘তোমরা তো তোমাদের শক্তি লইয়া আমাদের নিকট আসিতে।’ (৩৭:২৮)
তাহারা বলিবে, তোমরা তো বিশ্বাসীই ছিলে না, (৩৭:২৯)
‘এবং তোমাদের উপর আমাদের কোন কর্তৃত্ব ছিল না; বস্তুত তোমরাই ছিলে সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। (৩৭:৩০)
‘আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিপালকের কথা সত্য হইয়াছে, আমাদেরকে অবশ্যই শাস্তি আস্বাদন করিতে হইবে। (৩৭:৩১)
‘আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।’ (৩৭:৩২)
উহারা সকলেই সেই দিন শাস্তির শরীক হইবে। (৩৭:৩৩)
অপরাধীদের প্রতি আমি এইরূপই করিয়া থাকি। (৩৭:৩৪)
‘এই তো এক বাহিনী, তোমাদের সঙ্গে প্রবেশ করিতেছে।’ ‘উহাদের জন্য নাই অভিনন্দন, ইহারা তো জাহান্নামে জ্বলিবে।’ (৩৮:৫৯)
অনুসারীরা বলিবে, ‘বরং তোমরাও, তোমাদের জন্যও অবিনন্দন নাই। তোমরাই তো পূর্বে উহা আমাদের জন্য ব্যবস্থা করিয়াছ। কত নিকৃষ্ট এই আবাসস্থল!’ (৩৮:৬০)
উহারা বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যে ইহা আমাদের সম্মুখীন করিয়াছে, জাহান্নামে তাহার শাস্তি তুমি দ্বিগুণ বর্ধিত কর।’ (৩৮:৬১)
উহারা আরও বলিবে, ‘আমাদের কী হইল যে, আমরা যে সকল লোককে মন্দ বলিয়া গণ্য করিতাম তাহাদেরকে দেখিতে পাইতেছি না! (৩৮:৬২)
‘তবে কি আমরা উহাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রূপের পাত্র মনে করিতাম, না উহাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিবিভ্রম ঘটিয়াছে?’ (৩৮:৬৩)
ইহা নিশ্চিত সত্য-জাহান্নামীদের এই বাদ-প্রতিবাদ। (৩৮:৬৪)
নিঃসন্দেহে তোমরা আমাকে আহ্বান করিতেছ এমন একজনের দিকে যে দুনিয়া ও আখিরাতে কোথাও আহ্বানযোগ্য নয়। বস্তুত আমাদের প্রত্যাবর্তন তো আল্লাহ্র নিকট এবং সীমালংঘনকারীরাই জাহান্নামের অধিবাসী। (৪০:৪৩)
‘আমি তোমাদেরকে যাহা বলিতেছি, তোমরা তাহা অচিরেই স্মরণ করিবে এবং আমি আমার ব্যাপার আল্লাহ্তে অর্পণ করিতেছি; আল্লাহ্ তাঁহার বান্দাদের প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখেন।’ (৪০:৪৪)
অতঃপর আল্লাহ্র তাহাকে উহাদের ষড়যন্ত্রের অনিষ্ট হইতে রক্ষা করিলেন এবং কঠিন শাস্তি পরিবেষ্টন করিল ফির‘আওন সম্প্রদায়কে। (৪০:৪৫)
উহাদেরকে উপস্থিত করা হয় আগুনের সম্মুখে সকাল ও সন্ধ্যায় এবং যেদিন কিয়ামত ঘটিবে সেদিন বলা হইবে, ‘ফিরআওন-সম্প্রদায়কে নিক্ষেপ কর কঠিন শাস্তিতে।’ (৪০:৪৬)
যখন উহারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হইবে তখন দুর্বলেরা দাম্ভিকদেরকে বলিবে, ‘আমরা তো তোমাদেরই অনুসারী ছিলাম, এখন কি তোমরা আমাদের হইতে জাহান্নামের আগুনের কিয়দংশ নিবারণ করিবে?’ (৪০:৪৭)
দাম্ভিকেরা বলিবে, ‘আমরা সকলেই তো জাহান্নামে আছি, নিশ্চয় আল্লাহ্ বান্দাদের বিচার তো করিয়া ফেলিয়াছেন।’ (৪০:৪৮)
অগ্নিবাসীরা জাহান্নামের প্রহরীদেরকে বলিবে, ‘তোমাদের প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা কর তিনি যেন আমাদের হইতে লাঘব করেন এক দিনের শাস্তি।’ (৪০:৪৯)
তাহারা বলিবে, ‘তোমাদের নিকট কি স্পষ্ট নিদর্শনসহ তোমাদের রাসূলগণ আসে নাই?’ জাহান্নামীরা বলিবে, ‘অবশ্যই আসিয়াছিল।’ প্রহরীরা বলিবে, ‘তবে তোমরাই প্রার্থনা কর; আর কাফিরদের প্রার্থনা ব্যর্থই হয়। (৪০:৫০)