যখন তাহারা মু’মিনগণের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান আনিয়াছি’; আর যখন তাহারা নিভৃতে তাহাদের শয়তানদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই রহিয়াছি; আমরা শুধু তাহাদের সঙ্গে ঠাট্টা-তামাশা করিয়া থাকি।’ (২:১৪)
আল্লাহ্ তাহাদের সঙ্গে তামাশা করেন এবং তাহাদেরকে তাহাদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়াইবার অবকাশ দেন। (২:১৫)
ইহারাই হিদায়াতের বিনিময়ে ভ্রান্তি ক্রয় করিয়াছে। সুতরাং তাহাদের ব্যবসা লাভজনক হয় নাই, তাহারা সৎ পথেও পরিচালিত নহে। (২:১৬)
তাহাদের উপমা: যেমন এক ব্যক্তি অগ্নি প্রজ্বলিত করিল; উহা যখন তাহার চতুর্দিক আলোকিত করিল আল্লাহ্ তখন তাহাদের জ্যোতি অপসারিত করিলেন এবং তাহাদেরকে ঘোর অন্ধকারে ফেলিয়া দিলেন, তাহারা কিছুই দেখিতে পায় না- (২:১৭)
তাহারা বধির, মূক, অন্ধ, সুতরাং তাহারা ফিরিবে না। (২:১৮)
উহারা বলে, ‘আমরা আল্লাহ্ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনিলাম এবং আমরা আনুগত্য স্বীকার করিলাম’, কিন্তু ইহার পর উহাদের একদল মুখ ফিরাইয়া নেয়; বস্তুত উহারা মু’মিন নয়। (২৪:৪৭)
এবং যখন উহাদেরকে আহ্বান করা হয় আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের দিকে উহাদের মধ্যে ফয়সালা করিয়া দিবার জন্য তখন উহাদের একদল মুখ ফিরাইয়া নেয়। (২৪:৪৮)
আর যদি উহাদের প্রাপ্য থাকে তাহা হইলে উহারা বিনীতভাবে রাসূলের নিকট ছুটিয়া আসে। (২৪:৪৯)
উহাদের অন্তরে কি ব্যাধি আছে, না উহারা সংশয় পোষণ করে? না উহারা ভয় করে যে, আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূল উহাদের প্রতি জুলুম করিবেন? বরং উহারাই তো জালিম। (২৪:৫০)
উহারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহ্র শপথ করিয়া বলে যে, তুমি উহাদেরকে আদেশ করিলে উহারা অবশ্যই বাহির হইবে; তুমি বল, ‘শপথ করিও না, যথার্থ আনুগত্যই কাম্য। তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।’ (২৪:৫৩)
মানুষের মধ্যে কতক বলে, ‘আমরা আল্লাহে বিশ্বাস করি, কিন্তু আল্লাহ্র পথে যখন উহারা নিগৃহীত হয়, তখন উহারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্র শাস্তির মত গণ্য করে এবং তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে কোন সাহায্য আসিলে উহারা বলিতে থাকে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম।’ বিশ্ববাসীর অন্তঃকরণে যাহা আছে, আল্লাহ্ কি তাহা সম্যক অবগত নহেন?’ (২৯:১০)
মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন উহারা বিশুদ্ধচিত্তে উহাদের প্রতিপালককে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন উহাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ আস্বাদন করান তখন উহাদের একদল উহাদের প্রতিপালকের শরীক করিয়া থাকে; (৩০:৩৩)
তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহে নৌযানগুলি সমুদ্রে বিচরণ করে, যদ্দ্বারা তিনি তোমাদেরকে তাঁহার নিদর্শনাবলীর কিছু প্রদর্শন করেন? ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য। (৩১:৩১)
যখন তরংগ উহাদেরকে আচ্ছন্ন করে মেঘচ্ছায়ার মত তখন উহারা আল্লাহ্কে ডাকে তাহার আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া। কিন্তু যখন তিনি উহাদেরকে উদ্ধার করিয়া স্থলে পৌঁছান তখন উহাদের কেহ কেহ সরল পথে থাকে; কেবল বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে। (৩১:৩২)
আর স্মরণ কর, মুনাফিকরা ও যাহাদের অন্তরে ছিল ব্যাধি, তাহারা বলিতেছিল, ‘আল্লাহ্ এবং তাঁহার রাসূল আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন তাহা প্রতারণা ব্যতীত কিছুই নয়।’ (৩৩:১২)
আর উহাদের একদল বলিয়াছিল, ‘হে ইয়াস্রিববাসী! এখানে তোমাদের কোন স্থান নাই তোমরা ফিরিয়া চল’ এবং উহাদের মধ্যে একদল নবীর নিকট অব্যাহতি প্রার্থনা করিয়া বলিতেছিল, ‘আমাদের বাড়িঘর অরক্ষিত’; অথচ ঐগুলি অরক্ষিত ছিল না, আসলে পলায়ন করাই ছিল উহাদের উদ্দেশ্যে। (৩৩:১৩)
যদি বিভিন্ন দিক হইতে তাহাদের বিরুদ্ধে শত্রুদের প্রবেশ ঘটিত, অতঃপর তাহাদেরকে বিদ্রোহের জন্য প্ররোচিত করা হইত, তবে তাহারা অবশ্য তাহাই করিয়া বসিত, তাহারা ইহাতে কালবিলম্ব করিত না। (৩৩:১৪)
ইহারা তো পূর্বেই আল্লাহ্র সঙ্গে অঙ্গীকার করিয়াছিল যে, ইহারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করিবে না। আল্লাহ্র সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার সম্বন্ধে অবশ্যই জিজ্ঞাসা করা হইবে। (৩৩:১৫)
বল, ‘তোমাদের কোন লাভ হইবে না যদি তোমরা মৃত্যু অথবা হত্যার ভয়ে পলায়ন কর, তবে সেই ক্ষেত্রে তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করিতে দেওয়া হইবে।’ (৩৩:১৬)
বল, ‘কে তোমাদেরকে আল্লাহ্ হইতে রক্ষা করিবে, যদি তিনি তোমাদের অমঙ্গল ইচ্ছা করেন অথবা তিনি যদি তোমাদেরকে অনুগ্রহ করিতে ইচ্ছা করেন, তবে কে তোমাদের ক্ষতি করিবে?’ উহারা আল্লাহ্ ব্যতীত নিজেদের কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাইবে না। (৩৩:১৭)
আল্লাহ্ অবশ্যই জানেন তোমাদের মধ্যে কাহারা বাধাদানকারী এবং কাহারা তাহাদের ভ্রাতৃবর্গকে বলে, ‘আমাদের সঙ্গে আস।’ উহারা অল্পই যুদ্ধে অংশ নেয়- (৩৩:১৮)
তোমাদের ব্যাপারে কৃপণতাবশত। আর যখন ভীতি আসে তখন তুমি দেখিবে, মৃত্যুভয়ে মূর্চ্ছাতুর ব্যক্তির মত চক্ষু উল্টাইয়া উহারা তোমার দিকে তাকায়। কিন্তু যখন ভয় চলিয়া যায় তখন উহারা ধনের লালসায় তোমাদেরকে তীক্ষ্ণ ভাষায় বিদ্ধ করে। উহারা ঈমান আনে নাই, এইজন্য আল্লাহ্ উহাদের কার্যাবলী নিষ্ফল করিয়াছেন এবং আল্লাহ্র পক্ষে ইহা সহজ। (৩৩:১৯)
উহারা মনে করে, সম্মিলিত বাহিনী চলিয়া যায় নাই। যদি সম্মিলিত বাহিনী আবার আসিয়া পড়ে, তখন উহারা কামনা করিবে যে, ভাল হইত যদি উহারা যাযাবর মরুবাসীদের সঙ্গে থাকিয়া তোমাদের সংবাদ লইত! উহারা তোমাদের সঙ্গে অবস্থান করিলেও উহারা যুদ্ধ অল্পই করিত। (৩৩:২০)
তুমি কি মুনাফিকদেরকে দেখ নাই? উহারা কিতাবীদের মধ্যে যাহারা কুফরী করিয়াছে উহাদের সেই সব সঙ্গীকে বলে, ‘তোমরা যদি বহিষ্কৃত হও, আমরা অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে দেশত্যাগী হইব এবং আমরা তোমাদের ব্যাপারে কখনও কাহারও কথা মানিব না এবং যদি তোমরা আক্রান্ত হও আমরা অবশ্যই তোমাদেরকে সাহায্য করিব।’ কিন্তু আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিতেছেন যে, উহারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (৫৯:১১)
বস্তুত উহারা বহিস্কৃত হইলে মুনাফিকগণ তাহাদের সঙ্গে দেশত্যাগ করিবে না এবং উহারা আক্রান্ত হইলে ইহারা উহাদেরকে সাহায্য করিবে না এবং ইহারা সাহায্য করিতে আসিলেও অবশ্যই পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে; অতঃপর তাহারা কোন সাহায্যই পাইবে না। (৫৯:১২)
প্রকৃতপক্ষে ইহাদের অন্তরে আল্লাহ্ অপেক্ষা তোমাদের ভয়ই অধিকতর। ইহা এইজন্য যে, ইহারা এক অবুঝ সম্প্রদায়। (৫৯:১৩)
ইহারা সকলে সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে সমর্থ হইবে না, কিন্তু কেবল সুরক্ষিত জনপদের অভ্যন্তরে অথবা দুর্গ-প্রাচীরের অন্তরালে থাকিয়া; পরস্পরের মধ্যে উহাদের যুদ্ধ প্রচন্ড। তুমি মনে কর উহারা ঐক্যবদ্ধ, কিন্তু উহাদের মনের মিল নাই; ইহা এইজন্য যে, ইহারা এক নির্বোধ সম্প্রদায়। (৫৯:১৪)
ইহারা সেই লোকদের মত, যাহারা ইহাদের অব্যবহিত পূর্বে নিজেদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করিয়াছে, ইহাদের জন্য রহিয়াছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (৫৯:১৫)
ইহারা শয়তানের মত, সে মানুষকে বলে, ‘কুফরী কর’; অতঃপর যখন সে কুফরী করে তখন সে বলে, ‘তোমার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নাই, আমি তো জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় করি।’ (৫৯:১৬)
ফলে উভয়ের পরিণাম হইবে জাহান্নাম। সেখানে ইহারা স্থায়ী হইবে এবং ইহাই জালিমদের কর্মফল। (৫৯:১৭)
যখন মুনাফিকরা তোমার নিকট আসে তাহারা বলে, ‘আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আপনি নিশ্চয়ই আল্লাহ্র রাসূল।’ আল্লাহ্ জানেন যে, তুমি নিশ্চয়ই তাঁহার রাসূল এবং আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিতেছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। (৬৩:১)
উহারা উহাদের শপথগুলিকে ঢালরূপে ব্যবহার করে আর উহারা আল্লাহ্র পথ হইতে মানুষকে নিবৃত্ত করে। উহারা যাহা করিতেছে তাহা কত মন্দ! (৬৩:২)
ইহা এইজন্য যে, উহারা ঈমান আনিবার পর কুফরী করিয়াছে। ফলে উহাদের হৃদয় মোহর করিয়া দেওয়া হইয়াছে; পরিণামে উহারা বুঝে না। (৬৩:৩)
তুমি যখন উহাদের দিকে তাকাও উহাদের দেহাকৃতি তোমার নিকট প্রীতিকর মনে হয় এবং উহারা যখন কথা বলে, তুমি সাগ্রহে উহাদের কথা শ্রবণ কর, যদিও উহারা দেওয়ালে ঠেকান কাঠের স্তম্ভসদৃশ; উহারা যে কোন শোরগোলকে মনে করে উহাদেরই বিরুদ্ধে। উহারাই শত্রু, অতএব উহাদের সম্পর্কে সতর্ক হও; আল্লাহ্ উহাদেরকে ধ্বংস করুন! বিভ্রান্ত হইয়া উহারা কোথায় চলিয়াছে! (৬৩:৪)
যখন উহাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা আস, আল্লাহ্র রাসূল তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিবেন,’ তখন উহারা মাথা ফিরাইয়া লয় এবং তুমি উহাদেরকে দেখিতে পাও, উহারা দম্ভভরে ফিরিয়া যায়। (৬৩:৫)
তুমি উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা না কর, উভয়ই উহাদের জন্য সমান। আল্লাহ্ উহাদেরকে কখনও ক্ষমা করিবেন না। আল্লাহ্ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (৬৩:৬)
উহারাই বলে, ‘তোমরা আল্লাহ্র রাসূলের সহচরদের জন্য ব্যয় করিও না, যাহাতে উহারা সরিয়া পড়ে।’ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর ধনভান্ডার তো আল্লাহ্রই; কিন্তু মুনাফিকরা তাহা বুঝে না। (৬৩:৭)
উহারা বলে, ‘আমরা মদীনায় প্রত্যাবর্তন করিলে সেখান হইতে অবশ্যই প্রবল দুর্বলকে বহিষ্কার করিবে।’ কিন্তু শক্তি তো আল্লাহ্রই, আর তাঁহার রাসূল ও মু’মিনদের। তবে মুনাফিকরা ইহা জানে না। (৬৩:৮)