স্মরণ কর, যখন ফিরিশ্তাগণ বলিল, ‘হে মার্ইয়াম! নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তোমাকে তাঁহার পক্ষ হইতে একটি কালেমার সুসংবাদ দিতেছেন। তাহার নাম মাসীহ্ মার্ইয়াম-তনয় ‘ঈসা, সে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্তগণের অন্যতম হইবে। (৩:৪৫)
‘সে দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সঙ্গে কথা বলিবে এবং সে হইবে পুণ্যবানদের একজন।’ (৩:৪৬)
সে বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করে নাই, আমার সন্তান হইবে কীভাবে? তিনি বলিলেন, ‘এইভাবেই’, আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেন, ‘হও’ এবং ইহা হইয়া যায়। (৩:৪৭)
‘এবং তিনি তাহাকে শিক্ষা দিবেন কিতাব, হিকমত, তাওরাত ও ইন্জীল। (৩:৪৮)
‘এবং তাহাকে বনী ইসরাঈলের জন্য রাসূল করিবেন।’ সে বলিবে, ‘আমি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে তোমাদের নিকট নিদর্শন লইয়া আসিয়াছি। আমি তোমাদের জন্য কর্দম দ্বারা একটি পক্ষীসদৃশ আকৃতি গঠন করিব; অতঃপর ইহাতে আমি ফুৎকার দিব; ফলে আল্লাহ্র হুকুমে উহা পাখি হইয়া যাইবে। আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্তকে নিরাময় করিব এবং আল্লাহ্র হুকুমে মৃতকে জীবন্ত করিব। তোমরা তোমাদের গৃহে যাহা আহার কর ও মওজুদ কর তাহা তোমাদেরকে বলিয়া দিব। তোমরা যদি মু’মিন হও তবে ইহাতে তোমাদের জন্য নিদর্শন রহিয়াছে। (৩:৪৯)
‘আর আমি আসিয়াছি আমার সম্মুখে তাওরাতে যাহা রহিয়াছে উহার সমর্থকরূপে ও তোমাদের জন্য যাহা নিষিদ্ধ ছিল উহার কতকগুলিকে বৈধ করিতে। এবং আমি তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে তোমাদের নিকট নিদর্শন লইয়া আসিয়াছি। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় কর আর আমাকে অনুসরণ কর। (৩:৫০)
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ আমার প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক, সুতরাং তোমরা তাঁহার ‘ইবাদত করিবে। ইহাই সরল পথ।’ (৩:৫১)
যখন ‘ঈসা তাহাদের অবিশ্বাস উপলব্ধি করিল তখন সে বলিল, ‘আল্লাহ্র পথে কাহারা আমার সাহায্যকারী?’ হাওয়ারীগণ বলিল, ‘আমরাই আল্লাহ্র পথে সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহে্ ঈমান আনিয়াছি। আমরা আত্মসমপর্ণ-কারী, তুমি ইহার সাক্ষী থাক। (৩:৫২)
‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছ তাহাতে আমরা ঈমান আনিয়াছি এবং আমরা এই রাসূলের অনুসরণ করিয়াছি। সুতরাং আমাদেরকে সাক্ষ্যদান-কারীদের তালিকাভুক্ত কর।’ (৩:৫৩)
আর তাহারা চক্রান্ত করিয়াছিল আল্লাহ্ও কৌশল করিয়াছিলেন; আল্লাহ্ কৌশলীদের শ্রেষ্ঠ। (৩:৫৪)
স্মরণ কর, আল্লাহ্ বলিবেন, ‘হে মার্ইয়াম-তনয় ‘ঈসা! তোমার প্রতি ও তোমার জননীর প্রতি আমার অনুগ্রহ স্মরণ কর, পবিত্র আত্মা দ্বারা আমি তোমাকে শক্তিশালী করিয়াছিলাম এবং তুমি দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সঙ্গে কথা বলিতে; তোমাকে কিতাব, হিক্মত, তাওরাত ও ইন্জীল শিক্ষা দিয়াছিলাম; তুমি কর্দম দ্বারা আমার অনুমতিক্রমে পাখি সদৃশ আকৃতি গঠন করিতে এবং উহাতে ফুৎকার দিতে; ফলে আমার অনুমতিক্রমে উহা পাখি হইয়া যাইত; জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্তকে তুমি আমার অনুমতিক্রমে নিরাময় করিতে এবং আমার অনুমতিক্রমে তুমি মৃতকে জীবিত করিতে; আমি তোমা হইতে বনী ইস্রাঈলকে নিবৃত্ত রাখিয়াছিলাম; তুমি যখন তাহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আনিয়াছিলে তখন তাহাদের মধ্যে যাহারা কুফরী করিয়াছিল তাহারা বলিতেছিল, ‘ইহা তো স্পষ্ট জাদু।’ (৫:১১০)
আরও স্মরণ কর, আমি যখন ‘হাওয়ারীদেরকে এই আদেশ দিয়াছিলাম যে, ‘তোমরা আমার প্রতি ও আমার রাসূলের প্রতি ঈমান আন’, তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমরা ঈমান আনিলাম এবং তুমি সাক্ষী থাক যে, আমরা তো মুসলিম।’ (৫:১১১)
স্মরণ কর, হাওয়ারীগণ বলিয়ছিল, ‘হে মার্ইয়াম-তনয় ‘ঈসা! তোমার প্রতিপালক কি আমাদের জন্য আসমান হইতে খাদ্য-পরিপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ করিতে সক্ষম?’ সে বলিয়াছিল, ‘আল্লাহ্কে ভয় কর, যদি তোমরা মু’মিন হও।’ (৫:১১২)
তাহারা বলিয়াছিল, ‘আমরা চাই যে, উহা হইতে কিছু খাইব ও আমাদের চিত্ত প্রশান্তি লাভ করিবে। আর আমরা জানিতে চাই যে, তুমি আমাদেরকে সত্য বলিয়াছ এবং আমরা উহার সাক্ষী থাকিতে চাই।’ (৫:১১৩)
মার্ইয়াম-তনয় ‘ঈসা বলিল, ‘হে আল্লাহ্ আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য আসমান হইতে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা প্রেরণ কর; ইহা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য হইবে আনন্দোৎসবস্বরূপ এবং তোমার নিকট হইতে নিদর্শন। আর আমাদেরকে জীবিকা দান কর; তুমিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা।’ (৫:১১৪)
আল্লাহ্ বলিলেন, ‘আমিই তোমাদের নিকট উহা প্রেরণ করিব; কিন্তু ইহার পর তোমাদের মধ্যে কেহ কুফরী করিলে তাহাকে এমন শাস্তি দিব, যে শাস্তি বিশ্বজগতের অপর কাহাকেও দিব না।’ (৫:১১৫)