তোমরা সৎকাজ, আত্মসংযম ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন হইতে বিরত রহিবে এই শপথের জন্য আল্লাহ্র নামকে তোমরা অজুহাত করিও না। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (২:২২৪)
তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ্ তোমাদেরকে দায়ী করিবেন না। কিন্তু তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করিবেন।আল্লাহ্ ক্ষমাপরায়ণ, ধৈর্যশীল। (২:২২৫)
যাহারা স্ত্রীর সঙ্গে সংগত না হওয়ার শপথ করে তাহারা চারমাস অপেক্ষা করিবে। অতঃপর যদি তাহারা প্রত্যাগত হয় তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (২:২২৬)
আর যদি তাহারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে তবে আল্লাহ্ তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (২:২২৭)
তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তিন রজঃস্রাব কাল প্রতীক্ষায় থাকিবে। তাহারা আল্লাহ্ এবং আখিরাতে বিশ্বাসী হইলে তাহাদের গর্ভাশয়ে আল্লাহ্ যাহা সৃষ্টি করিয়াছেন তাহা গোপন রাখা তাহাদের পক্ষে বৈধ নহে। যদি তাহারা আপোস-নিষ্পত্তি করিতে চায় তবে উহাতে তাহাদের পুনঃ গ্রহণে তাহাদের স্বামিগণ অধিক হকদার। নারীদের তেমনি ন্যায়সংগত অধিকার আছে, যেমন আছে তাহাদের উপর পুরুষদের; কিন্তু নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা আছে। আল্লাহ্ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (২:২২৮)
তালাক দুইবার। অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিমত রাখিয়া দিবে অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করিয়া দিবে। তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে যাহা প্রদান করিয়াছ তন্মধ্য হইতে কোন কিছু গ্রহণ করা তোমাদের পক্ষে বৈধ নহে। অবশ্য যদি তাহাদের উভয়ের আশংকা হয় যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিয়া চলিতে পারিবে না, তবে স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে নিষ্কৃতি পাইতে চাহিলে তাহাতে তাহাদের কাহারও কোন অপরাধ নাই। এইসব আল্লাহ্র সীমারেখা। তোমরা উহা লংঘন করিও না। যাহারা এইসব সীমারেখা লংঘন করে তাহারাই জালিম। (২:২২৯)
অতঃপর যদি সে তাহাকে তালাক দেয় তবে সে তাহার জন্য বৈধ হইবে না, যে পর্যন্ত সে অন্য স্বামীর সঙ্গে সংগত না হইবে। অতঃপর সে যদি তাহাকে তালাক দেয় আর তাহারা উভয়ে মনে করে যে, তাহারা আল্লাহ্র সীমারেখা রক্ষা করিতে সমর্থ হইবে, তবে তাহাদের পুনর্মিলনে কাহারও কোন অপরাধ হইবে না। এইগুলি আল্লাহ্র বিধান, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ্ ইহা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। (২:২৩০)
যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও এবং তাহারা ইদ্দত পূর্তির নিকটবর্তী হয় তখন তোমরা হয় যথাবিধি তাহাদেরকে রাখিয়া দিবে অথবা বিধিমত মুক্ত করিয়া দিবে। কিন্তু তাহাদের ক্ষতি করিয়া সীমালংঘনের উদ্দেশ্যে তাহাদেরকে তোমরা আটকাইয়া রাখিও না। যে এইরূপ করে, সে নিজের প্রতি জুলুম করে। এবং তোমরা আল্লাহ্র বিধানকে ঠাট্টা-তামাশার বস্তু করিও না এবং তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র নিয়ামত ও কিতাব এবং হিক্মত যাহা তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন-যদ্দ্বারা তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, তাহা স্মরণ কর। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে জ্ঞানময়। (২:২৩১)
যে স্তন্যপানকাল পূর্ণ করিতে চাহে তাহার জন্য জননীগণ তাহাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বৎসর স্তন্যপান করাইবে। জনকের কর্তব্য যথাবিধি তাহাদের ভরণ-পোষণ করা। কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত কার্যভার দেওয়া হয় না। কোন জননীকে তাহার সন্তানের জন্য এবং কোন জনককে তাহার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হইবে না। এবং উত্তরাধিকারীরও অনুরূপ কর্তব্য। কিন্তু যদি তাহারা পরস্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্যপান বন্ধ রাখিতে চায় তবে তাহাদের কাহারও কোন অপরাধ নাই। তোমরা যাহা বিধিমত দিতে চাহিয়াছিলে, তাহা যদি অর্পণ কর তবে ধাত্রী দ্বারা তোমাদের সন্তানকে স্তন্যপান করাইতে চাহিলে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ উহার সম্যক দ্রষ্টা। (২:২৩৩)
যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করিয়াছ এবং তাহাদের জন্য মাহ্র ধার্য করিয়াছ তাহাদেরকে তালাক দিলে তোমাদের কোন পাপ নাই। তোমরা তাহাদের সংস্থানের ব্যবস্থা করিও-সচ্ছল তাহার সাধ্যমত এবং অসচ্ছল তাহার সামর্থ্যানুযায়ী বিধিমত খরচপত্রের ব্যবস্থা করিবে, ইহা নেককার লোকদের কর্তব্য। (২:২৩৬)
তালাকপ্রাপ্ত নারীদেরকে যথারীতি ভরণ-পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য। (২:২৪১)
হে মু’মিনগণ! তোমরা মু’মিন নারীগণকে বিবাহ করিবার পর উহাদেরকে স্পর্শ করিবার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের জন্য তাহাদের পালনীয় কোন ইদ্দত নাই যাহা তোমরা গণনা করিবে। তোমরা উহাদেরকে কিছু সামগ্রী দিবে এবং সৌজন্যের সঙ্গে উহাদেরকে বিদায় করিবে। (৩৩:৪৯)
হে নবী! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর, উহাদেরকে তালাক দিও ‘ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া এবং তোমরা ‘ইদ্দতের হিসাব রাখিও এবং তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় করিও। তোমরা উহাদেরকে উহাদের বাসগৃহ হইতে বহিষ্কার করিও না এবং উহারাও যেন বাহির না হয়, যদি না উহারা লিপ্ত হয় স্পষ্ট অশ্লীলতায়। এইগুলি আল্লাহ্র নির্ধারিত সীমা; যে আল্লাহ্র সীমা লংঘন করে সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জান না, হয়তো আল্লাহ্ ইহার পর কোন উপায় করিয়া দিবেন। (৬৫:১)
উহাদের ‘ইদ্দত পূরণের কাল আসন্ন হইলে তোমরা হয় যথাবিধি উহাদেরকে রাখিয়া দিবে, না হয় উহাদেরকে যথাবিধি পরিত্যাগ করিবে এবং তোমাদের মধ্য হইতে দুইজন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখিবে; আর তোমরা আল্লাহ্র জন্য সঠিক সাক্ষ্য দিবে। ইহা দ্বারা তোমাদের মধ্যে যে কেহ আল্লাহ্ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে তাহাকে উপদেশ দেওয়া হইতেছে। যে কেহ আল্লাহ্কে ভয় করে আল্লাহ্ তাহার পথ করিয়া দিবেন, (৬৫:২)
এবং তাহাকে তাহার ধারণাতীত উৎস হইতে দান করিবেন রিযিক। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র উপর নির্ভর করে তাহার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। আল্লাহ্ তাঁহার ইচ্ছা পূরণ করিবেনই; আল্লাহ্ সমস্ত কিছুর জন্য স্থির করিয়াছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। (৬৫:৩)
তোমাদের যে সকল স্ত্রীর আর ঋতুমতী হইবার আশা নাই তাহাদের ‘ইদ্দত সম্পর্কে তোমরা সন্দেহ করিলে তাহাদের ‘ইদ্দতকাল হইবে তিন মাস এবং যাহারা এখনও রজঃস্বলা হয় নাই তাহাদেরও; আর গর্ভবতী নারীদের ‘ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আল্লাহ্কে যে ভয় করে আল্লাহ্ তাহার সমস্যা সমাধান সহজ করিয়া দিবেন। (৬৫:৪)
ইহা আল্লাহ্র বিধান যাহা তিনি তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন। আল্লাহ্কে যে ভয় করে তিনি তাহার পাপ মোচন করিবেন এবং তাহাকে দিবেন মহাপুরস্কার। (৬৫:৫)
তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেইরূপ গৃহে বাস কর তাহাদেরকেও সেইরূপ গৃহে বাস করিতে দিবে; তাহাদেরকে উত্ত্যক্ত করিবে না সঙ্কটে ফেলিবার জন্য; তাহারা গর্ভবতী হইয়া থাকিলে সন্তান প্রসব পর্যন্ত তাহাদের জন্য ব্যয় করিবে। যদি তাহারা তোমাদের সন্তানদেরকে স্তন্য দান করে তবে তাহাদেরকে পারিশ্রমিক দিবে এবং সন্তানের কল্যাণ সম্পর্কে তোমরা সঙ্গতভাবে নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করিবে। তোমরা যদি নিজ নিজ দাবিতে অনমনীয় হও তাহা হইলে অন্য নারী তাহার পক্ষে স্তন্য দান করিবে। (৬৫:৬)
বিত্তবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করিবে এবং যাহার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ্ যাহা দান করিয়াছেন তাহা হইতে ব্যয় করিবে। আল্লাহ্ যাহাকে যে সামর্থ্য দিয়াছেন তদপেক্ষা গুরুতর বোঝা তিনি তাহার উপর চাপান না। আল্লাহ্ কষ্টের পর দিবেন স্বস্তি। (৬৫:৭)