আমি তো নূহ্কে তাহার সম্প্রদায়ের নিকট পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের জন্য প্রকাশ্য সতর্ককারী, (১১:২৫)
যেন তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কিছু্র ‘ইবাদত না কর; আমি তো তোমাদের জন্য এক মর্মন্তুদ দিবসের শাস্তি আশংকা করি।’ (১১:২৬)
তাহার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা, যাহারা ছিল কাফির তাহারা বলিল, ‘আমরা তোমাকে তো আমাদের মত মানুষ ব্যতীত কিছু দেখিতেছি না; আমরা তো দেখিতেছি, তোমার অনুসরণ করিতেছে তাহারাই, যাহারা আমাদের মধ্যে বাহ্য দৃষ্টিতেই অধম এবং আমরা আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব দেখিতেছি না; বরং আমরা তোমাদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করি।’ (১১:২৭)
সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমাকে বল, আমি যদি আমার প্রতিপালক প্রেরিত স্পষ্ট নিদর্শনে প্রতিষ্ঠিত থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তাঁহার নিজ অনুগ্রহ হইতে দান করিয়া থাকেন, আর ইহা তোমাদের নিকট গোপন রাখা হইয়াছে; আমি কি এই বিষয়ে তোমাদেরকে বাধ্য করিতে পারি, যখন তোমরা ইহা অপছন্দকর? (১১:২৮)
‘হে আমার সম্প্রদায়! ইহার পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধনসম্পদ যাচ্ঞা করি না। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্রই নিকট এবং মু’মিনদেরকে তাড়াইয়া দেওয়া আমার কাজ নয়; তাহারা নিশ্চিতভাবে তাহাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করিবে। কিন্তু আমি তো দেখিতেছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়। (১১:২৯)
‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি যদি তাহাদেরকে তাড়াইয়া দেই, তবে আল্লাহ্ হইতে আমাকে কে রক্ষা করিবে? তবুও তোমরা উপদেশ গ্রহণ করিবে না? (১১:৩০)
‘আমি তোমাদেরকে বলি না, ‘আমার নিকট আল্লাহ্র ধনভান্ডার আছে;’ আর না অদৃশ্য সম্বন্ধে আমি অবগত এবং আমি ইহাও বলি না যে, আমি ফিরিশ্তা। তোমাদের দৃষ্টিতে যাহারা হেয় তাহাদের সম্বন্ধে আমি বলি না যে, আল্লাহ্ তাহাদেরকে কখনই মঙ্গল দান করিবেন না; তাহাদের অন্তরে যাহা আছে তাহা আল্লাহ্ সম্যক অবগত। তাহা হইলে আমি অবশ্যই জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’ (১১:৩১)
তাহারা বলিল, ‘হে নূহ্! তুমি তো আমাদের সঙ্গে বিতন্ডা করিয়াছ-তুমি বিতন্ডা করিয়াছ আমাদের সঙ্গে অতি মাত্রায়; সুতরাং তুমি সত্যবাদী হইলে আমাদেরকে যাহার ভয় দেখাইতেছে তাহা আনয়ন কর।’ (১১:৩২)
সে বলিল, ‘ইচ্ছা করিলে আল্লাহ্ই উহা তোমাদের নিকট উপস্থিত করিবেন এবং তোমরা উহা ব্যর্থ করিতে পারিবে না। (১১:৩৩)
‘আমি তোমাদেরকে উপদেশ দিতে চাহিলেও আমার উপদেশ তোমাদের উপকারে আসিবে না, যদি আল্লাহ্ তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিতে চান। তিনিই তোমাদের প্রতিপালক এবং তাঁহারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন।’ (১১:৩৪)
তাহারা কি বলে, সে ইহা রচনা করিয়াছে? বল, ‘আমি যদি ইহা রচনা করিয়া থাকি, তবে আমিই আমার অপরাধের জন্য দায়ী হইব। তোমরা যে অপরাধ করিতেছ তাহা হইতে আমি দায়মুক্ত।’ (১১:৩৫)
নূহের প্রতি প্রত্যাদেশ হইয়াছিল, ‘যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারা ব্যতীত তোমার সম্প্রদায়ের অন্য কেহ কখনও ঈমান আনিবে না। সুতরাং তাহারা যাহা করে তজ্জন্য তুমি দুঃখিত হইও না। (১১:৩৬)
‘তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার প্রত্যাদেশ অনুযায়ী নৌকা নির্মাণ কর এবং যাহারা সীমালংঘন করিয়াছে তাহাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলিও না; তাহারা তো নিমজ্জিত হইবে।’ (১১:৩৭)
সে নৌকা নির্মাণ করিতে লাগিল এবং যখনই তাহার সম্প্রদায়ের প্রধানেরা তাহার নিকট দিয়া যাইত, তাহাকে উপহাস করিত; সে বলিত, ‘তোমরা যদি আমাকে উপহাস কর তবে আমরাও তোমাদেরকে উপহাস করিব, যেমন তোমরা উপহাস করিতেছ; (১১:৩৮)
‘এবং তোমরা অচিরে জানিতে পারিবে- কাহার উপর আসিবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আর তাহার উপর আপতিত হইবে স্থায়ী শাস্তি।’ (১১:৩৯)
নূহের সম্প্রদায় রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করিয়াছিল। (২৬:১০৫)
যখন উহাদের ভ্রাতা নূহ্ উহাদেরকে বলিল, ‘তোমরা কি সাবধান হইবে না? (২৬:১০৬)
‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। (২৬:১০৭)
‘অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। (২৬:১০৮)
‘আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না; আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। (২৬:১০৯)
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।’ (২৬:১১০)
উহারা বলিল, ‘আমরা কি তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করিব অথচ ইতরজনেরা তোমার অনুসরণ করিতেছে?’ (২৬:১১১)
নূহ্ বলিল, ‘উহারা কী করিত তাহা আমার জানা নাই।’ (২৬:১১২)
উহাদের হিসাব গ্রহণ তো আমার প্রতিপালকেরই কাজ; যদি তোমরা বুঝিতে! (২৬:১১৩)
‘মু’মিনদেরকে তাড়াইয়া দেওয়া আমার কাজ নহে। (২৬:১১৪)
‘আমি তো কেবল একজন স্পষ্ট সতর্ককারী।’ (২৬:১১৫)
উহারা বলিল, ‘হে নূহ্! তুমি যদি নিবৃত্ত না হও তবে তুমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে নিহতদের শামিল হইবে।’ (২৬:১১৬)
নূহ্ বলিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায়ই তো আমাকে অস্বীকার করিতেছে। (২৬:১১৭)
‘সুতরাং তুমি আমার ও উহাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করিয়া দাও এবং আমাকে ও আমার সঙ্গে যেসব মু’মিন আছে, তাহাদেরকে রক্ষা কর।’ (২৬:১১৮)
অতঃপর আমি তাহাকেও তাহার সঙ্গে যাহারা ছিল, তাহাদেরকে রক্ষা করিলাম বোঝাই নৌযানে। (২৬:১১৯)
তৎপর অবশিষ্ট সকলকে নিমজ্জিত করিলাম। (২৬:১২০)
ইহাতে অবশ্যই রহিয়াছে নিদর্শন, কিন্তু উহাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নহে। (২৬:১২১)
এবং তোমার প্রতিপালক, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (২৬:১২২)
আমি তো নূহ্কে তাহার সম্প্রদায়ের নিকট প্রেরণ করিয়াছিলাম। সে উহাদের মধ্যে অবস্থান করিয়াছিল পঞ্চাশ কম হাজার বৎসর। অতঃপর প্লাবন উহাদেরকে গ্রাস করে; কারণ উহারা ছিল সীমালংঘনকারী। (২৯:১৪)
অতঃপর আমি তাহাকে এবং যাহারা তরণীতে আরোহণ করিয়াছিল তাহাদেরকে রক্ষা করিলাম এবং বিশ্বজগতের জন্য ইহাকে করিলাম একটি নিদর্শন। (২৯:১৫)
আমি ধ্বংস করিয়াছিলাম ইহাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়কে, ইহারা তো ছিল সত্যত্যাগী সম্প্রদায়। (৫১:৪৬)
ইহাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায়ও অস্বীকার করিয়াছিল-অস্বীকার করিয়াছিল আমার বান্দাকে আর বলিয়াছিল, ‘এ তো এক পাগল।’ আর তাহাকে ভীতি প্রদর্শন করা হইয়াছিল। (৫৪:৯)
তখন সে তাহার প্রতিপালককে আহ্বান করিয়া বলিয়াছিল, ‘আমি তো অসহায়, অতএব তুমি প্রতিবিধান কর।’ (৫৪:১০)
ফলে আমি উন্মুক্ত করিয়া দিলাম আকাশের দ্বার প্রবল বারি বর্ষণে, (৫৪:১১)
এবং মৃত্তিকা হইতে উৎসারিত করিলাম প্রস্রবণ; অতঃপর সকল পানি মিলিত হইল এক পরিকল্পনা অনুসারে। (৫৪:১২)
তখন নূহকে আরোহণ করাইলাম কাষ্ঠ ও কীলক নির্মিত এক নৌযানে, (৫৪:১৩)
যাহা চলিত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে; ইহা পুরস্কার তাহার জন্য, যে প্রত্যাখ্যাত হইয়াছিল। (৫৪:১৪)
আমি তো ইহাকে রাখিয়া দিয়াছি এক নিদর্শনরূপে; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেহ আছে কি? (৫৪:১৫)
কী কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী! (৫৪:১৬)
নূহ্কে আমি প্রেরণ করিয়াছিলাম তাহার সম্প্রদায়ের প্রতি এই নির্দেশসহ: তুমি তোমার সম্প্রদায়কে সতর্ক কর তাহাদের প্রতি মর্মন্তুদ শাস্তি আসিবার পূর্বে। (৭১:১)
সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি তো তোমাদের জন্য স্পষ্ট সতর্ককারী- (৭১:২)
‘এই বিষয়ে যে, ‘তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর ও তাঁহাকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর; (৭১:৩)
‘তিনি তোমাদের পাপ ক্ষমা করিবেন এবং তিনি তোমাদেরকে অবকাশ দিবেন এক নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত। নিশ্চয় আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত কাল উপস্থিত হইলে উহা বিলম্বিত হয় না; যদি তোমরা ইহা জানিতে!” (৭১:৪)
সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আমার সম্প্রদায়কে দিবারাত্রি আহ্বান করিয়াছি, (৭১:৫)
‘কিন্তু আমার আহবান উহাদের পলায়ন প্রবণতাই বৃদ্ধি করিয়াছে। (৭১:৬)
‘আমি যখনই উহাদেরকে আহ্বান করি যাহাতে তুমি উহাদেরকে ক্ষমা কর, উহারা কানে অঙ্গুলী দেয়, বস্ত্রাবৃত করে নিজেদেরকে ও জিদ করিতে থাকে এবং অতিশয় ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে। (৭১:৭)
‘অতঃপর আমি উহাদেরকে আহ্বান করিয়াছি প্রকাশ্যে, (৭১:৮)