আদ জাতির নিকট উহাদের ভ্রাতা হূদকে পাঠাইয়াছিলাম, সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তোমরা তো কেবল মিথ্যা রচনাকারী। (১১:৫০)
‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি ইহার পরিবর্তে তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক যাচ্ঞা করি না। আমার পারিশ্রমিক আছে তাঁহারই নিকট, যিনি আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। তোমরা কি তবুও অনুধাবন করিবে না? (১১:৫১)
‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁহার দিকেই ফিরিয়া আস। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বারি বর্ষণ করিবেন। তিনি তোমাদেরকে আরও শক্তি দিয়া তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করিবেন এবং তোমরা অপরাধী হইয়া মুখ ফিরাইয়া লইও না।’ (১১:৫২)
উহারা বলিল, ‘হে হূদ! তুমি আমাদের নিকট কোন স্পষ্ট প্রমাণ আনয়ন কর নাই, তোমার কথায় আমরা আমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করিবার নহি এবং আমরা তোমাতে বিশ্বাসী নহি। (১১:৫৩)
‘আমরা তো ইহাই বলি, আমাদের উপাস্যদের মধ্যে কেহ তোমাকে অশুভ দ্বারা আবিষ্ট করিয়াছে।’ সে বলিল, ‘আমি তো আল্লাহ্কে সাক্ষী করিতেছি এবং তোমরাও সাক্ষী হও, নিশ্চয়ই আমি তাহা হইতে মুক্ত যাহাকে তোমরা আল্লাহ্র শরীক কর, (১১:৫৪)
‘আল্লাহ্ ব্যতীত। তোমরা সকলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর; অতঃপর আমাকে অবকাশ দিও না। (১১:৫৫)
‘আমি নির্ভর করি আমার ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র উপর; এমন কোন জীবজন্তু নাই, যে তাঁহার পূর্ণ আয়ত্তাধীন নয়; নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক আছেন সরল পথে। (১১:৫৬)
‘অতঃপর তোমরা মুখ ফিরাইয়া লইলেও আমি যাহাসহ তোমাদের নিকট প্রেরিত হইয়াছিল, আমি তো তাহা তোমাদের নিকট পৌঁছাইয়া দিয়াছি; এবং আমার প্রতিপালক তোমাদের হইতে ভিন্ন কোন সম্প্রদায়কে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করিবেন এবং তোমরা তাঁহার কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারিবে না। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক সমস্ত কিছুর রক্ষণাবেক্ষণকারী।’ (১১:৫৭)
এবং যখন আমার নির্দেশ আসিল তখন আমি হূদ ও তাহার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছিল তাহাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করিলাম এবং রক্ষা করিলাম তাহাদেরকে কঠিন শাস্তি হইতে। (১১:৫৮)
এই ‘আদ জাতি তাহাদের প্রতিপালকের নিদর্শন অস্বীকার করিয়াছিল এবং অমান্য করিয়াছিল তাঁহার রাসূলগণকে এবং উহারা প্রত্যেক উদ্ধত স্বৈরাচারীর নির্দেশ অনুসরণ করিয়াছিল। (১১:৫৯)
এই দুনিয়ায় উহাদেরকে করা হইয়াছিল লা‘নতগ্রস্ত এবং লা‘নতগ্রস্ত হইবে উহারা কিয়ামতের দিনেও। জানিয়া রাখ! ‘আদ সম্প্রদায় তো তাহাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করিয়াছিল। জানিয়া রাখ! ধ্বংসই হইল পরিণাম ‘আদের, যাহারা হূদের সম্প্রদায়। (১১:৬০)
‘আদ সম্প্রদায় রাসূলগণকে অস্বীকার করিয়াছিল। (২৬:১২৩)
যখন উহাদের ভ্রাতা হূদ উহাদেরকে বলিল, ‘তোমরা কি সাবধান হইবে না? (২৬:১২৪)
‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। (২৬:১২৫)
‘অতএব আল্লাহ্কে ভয় কর এবং আামর আনুগত্য কর। (২৬:১২৬)
‘আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না, আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট আছে। (২৬:১২৭)
‘তোমরা কি প্রতিটি উচ্চ স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করিতেছ নিরর্থক? (২৬:১২৮)
‘আর তোমরা প্রাসাদ নির্মাণ করিতেছ এই মনে করিয়া যে, তোমরা চিরস্থায়ী হইবে। (২৬:১২৯)
‘এবং যখন তোমরা আঘাত হান তখন আঘাত হানিয়া থাক কঠোরভাবে। (২৬:১৩০)
‘অতএব তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর। (২৬:১৩১)
‘ভয় কর তাঁহাকে যিনি তোমাদেরকে দান করিয়াছেন সেই সমুদয়, যাহা তোমরা জান। (২৬:১৩২)
‘তিনি তোমাদেরকে দান করিয়াছেন চতুষ্পদ জন্তু ও সন্তান-সন্ততি। (২৬:১৩৩)
‘উদ্যান ও প্রস্রবণ; (২৬:১৩৪)
‘আমি তো তোমাদের জন্য আশংকা করি মহাদিবসের শাস্তির।’ (২৬:১৩৫)
উহারা বলিল, ‘তুমি উপদেশ দাও অথবা না-ই দাও, উভয়ই আমাদের জন্য সমান। (২৬:১৩৬)
ইহা তো পূর্ববর্তীদেরই স্বভাব। (২৬:১৩৭)
‘আমার শাস্তিপ্রাপ্তদের শামিল নই।’ (২৬:১৩৮)
অতঃপর উহারা তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিল এবং আমি উহাদেরকে ধ্বংস করিলাম। ইহাতে অবশ্যই আছে নিদর্শন; কিন্তু উহাদের অধিকাংশই মু’মিন নহে। (২৬:১৩৯)
এবং তোমার প্রতিপালক, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (২৬:১৪০)
এবং আমি ‘আদ ও সামূদকে ধ্বংস করিয়াছিলাম; উহাদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্য ইহার সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান উহাদের কাজকে উহাদের দৃষ্টিতে শোভন করিয়াছিল এবং উহাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়াছিল, যদিও উহারা ছিল বিচক্ষণ। (২৯:৩৮)
এবং আমি সংহার করিয়াছিলাম কারূন, ফির‘আওন ও হামানকে। মূসা উহাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শনসহ আসিয়াছিল; তখন তাহারা দেশে দম্ভ করিত; কিন্তু উহারা আমার শাস্তি এড়াইতে পারে নাই। (২৯:৩৯)
উহাদের প্রত্যেককেই আমি তাহার অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়াছিলাম: উহাদের কাহারও প্রতি প্রেরণ করিয়াছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝটিকা, উহাদের কাহাকেও আঘাত করিয়াছিল মহানাদ, কাহাকেও আমি প্রোথিত করিয়াছিলাম ভূগর্ভে এবং কাহাকেও করিয়াছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ্ তাহাদের প্রতি কোন জুলুম করেন নাই; তাহারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করিয়াছিল। (২৯:৪০)
আর ‘আদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, উহারা পৃথিবীতে অযথা দম্ভ করিত এবং বলিত, ‘আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে আছে?’ উহারা কি তবে লক্ষ্য করে নাই যে, আল্লাহ্, যিনি উহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তিনি উহাদের অপেক্ষা শক্তিশালী? অথচ উহারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করিত। (৪১:১৫)
অতঃপর আমি উহাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাইবার জন্য উহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিয়াছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু অশুভ দিনে। আখিরাতের শাস্তি তো অধিকতর লাঞ্ছনাদায়ক এবং উহাদেরকে সাহায্য করা হইবে না। (৪১:১৬)
আর সামূদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার তো এই যে, আমি উহাদেরকে পথনির্দেশ করিয়াছিলাম, কিন্তু উহারা সৎপথের পরিবর্তে ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করিয়াছিল। অতঃপর উহাদেরকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তির বজ্র আঘাত হানিল উহাদের কৃতকর্মের পরিণামস্বরূপ। (৪১:১৭)
স্মরণ কর, ‘আদ্ সম্প্রদায়ের ভ্রাতার কথা, যাহার পূর্বে এবং পরেও সতর্ককারীরা আসিয়াছিল। সে তাহার আহ্কাফ্বাসী সম্প্রদায়কে সতর্ক করিয়াছিল এই বলিয়া, ‘তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত কাহারও ‘ইবাদত করিও না। আমি তো তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করিতেছি।’ (৪৬:২১)
উহারা বলিয়াছিল, ‘তুমি কি আমাদেরকে আমাদের দেব-দেবীগুলির পূজা হইতে নিবৃত্ত করিতে আসিয়াছ? তুমি সত্যবাদী হইলে আমাদেরকে যাহার ভয় দেখাইতেছ তাহা আনয়ন কর।’ (৪৬:২২)
সে বলিল, ‘ইহার জ্ঞান তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট আছে। আমি যাহা লইয়া প্রেরিত হইয়াছি কেবল তাহাই তোমাদের নিকট প্রচার করি, কিন্তু আমি দেখিতেছি, তোমরা এক মূঢ় সম্প্রদায়।’ (৪৬:২৩)
‘অতঃপর যখন উহারা উহাদের উপত্যকার দিকে মেঘ আসিতে দেখিল তখন বলিতে লাগিল, ‘উহা তো মেঘ, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করিবে।’ হূদ বলিল, ‘ইহাই তো তাহা, যাহা তোমরা ত্বরান্বিত করিতে চাহিয়াছ, এক ঝড়, ইহাতে রহিয়াছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (৪৬:২৪)
‘আল্লাহ্র নির্দেশে ইহা সমস্ত কিছুকে ধ্বংস করিয়া দিবে।’ অতঃপর উহাদের পরিণাম এই হইল যে, উহাদের বসতিগুলি ছাড়া আর কিছুই রহিল না। এইভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়া থাকি। (৪৬:২৫)
আমি উহাদেরকে যে প্রতিষ্ঠা দিয়াছিলাম তোমাদেরকে তাহা দেই নাই; আমি উহাদেরকে দিয়াছিলাম কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়; কিন্তু উহাদের কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় উহাদের কোন কাজে আসে নাই; কেননা উহারা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করিয়াছিল। যাহা লইয়া উহারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করিত, উহাই উহাদেরকে পরিবেষ্টন করিল। (৪৬:২৬)
এবং নিদর্শন রহিয়াছে ‘আদের ঘটনায়, যখন আমি তাহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করিয়াছিলাম অকল্যাণকর বায়ু; (৫১:৪১)
ইহা যাহা কিছুর উপর দিয়া বহিয়া গিয়াছিল তাহাকেই চূর্ণ-বিচূর্ণ করিয়া দিয়াছিল, (৫১:৪২)
‘আদ সম্প্রদায় সত্য অস্বীকার করিয়াছিল, ফলে কিরূপ ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী! (৫৪:১৮)
উহাদের উপর আমি প্রেরণ করিয়াছিলাম ঝঞ্ঝাবায়ু নিরবচ্ছিন্ন দুর্ভাগ্যের দিনে, (৫৪:১৯)
মানুষকে উহা উৎখাত করিয়াছিল উন্মুলিত খর্জুর-কান্ডের ন্যায়। (৫৪:২০)
কী কঠোর আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী! (৫৪:২১)
আর ‘আদ সম্প্রদায়, উহাদেরকে ধ্বংস করা হইয়াছিল এক প্রচন্ড ঝঞ্ঝাবায়ু দ্বারা, (৬৯:৬)
যাহা তিনি উহাদের উপর প্রবাহিত করিয়াছিলেন সপ্তরাত্রি ও অষ্টদিবস বিরামহীনভাবে; তখন তুমি উক্ত সম্প্রদায়কে দেখিতে-উহারা সেখানে লুটাইয়া পড়িয়া আছে সারশূন্য খর্জুর কান্ডের ন্যায়। (৬৯:৭)