মাদইয়ানবাসীদের নিকট তাহাদের ভ্রাতা শু‘আয়বকে আমি পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ্ নাই, মাপে ও ওজনে কম করিও না; আমি তোমাদেরকে সমৃদ্ধিশালী দেখিতেছি, কিন্তু আমি তোমাদের জন্য আশঙ্কা করিতেছি এক সর্বগ্রাসী দিবসের শাস্তি। (১১:৮৪)
‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপিও ও ওজন করিও, লোকদেরকে তাহাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়াইও না। (১১:৮৫)
‘যদি তোমরা মু’মিন হও তবে আল্লাহ্-অনুমোদিত যাহা বাকি থাকিবে তোমাদের জন্য তাহা উত্তম; আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই।’ (১১:৮৬)
উহারা বলিল, ‘হে শু‘আয়ব! তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পিতৃপুরুষেরা যাহার ‘ইবাদত করিত আমাদেরকে তাহা বর্জন করিতে হইবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যাহা করি তাহাও? তুমি তো অবশ্যই সহিষ্ণু, ভাল মানুষ!’ (১১:৮৭)
সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ভাবিয়া দেখিয়াছ কি, আমি যদি আমার প্রতিপালক-প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকি এবং তিনি যদি তাঁহার নিকট হইতে আমাকে উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ দান করিয়া থাকেন তবে কী করিয়া আমি আমার কর্তব্য হইতে বিরত থাকিব! আমি তোমাদেরকে যাহা নিষেধ করি আমি নিজে তাহা করিতে ইচ্ছা করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করিতে চাই। আমার কার্যসাধন তো আল্লাহ্রই সাহায্যে; আমি তাঁহারই উপর নির্ভর করি এবং আমি তাঁহারই অভিমুখী। (১১:৮৮)
‘হে আমার সম্প্রদায়! আমার সঙ্গে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যাহাতে তোমাদের উপর তাহার অনুরূপ বিপদ আপতিত হইবে যাহা আপতিত হইয়াছিল নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হূদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালিহের সম্প্রদায়ের উপর; আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের হইতে দূরে নয়। (১১:৮৯)
‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁহার দিকে প্রত্যাবর্তন কর; আমার প্রতিপালক তো পরম দয়ালু, প্রেমময়।’ (১১:৯০)
উহারা বলিল, ‘হে শু‘আয়ব! তুমি যাহা বল তাহার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখিতেছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকিলে আমরা তোমাকে প্রস্তর নিক্ষেপ করিয়া মারিয়া ফেলিতাম; আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও।’ (১১:৯১)
সে বলিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমাদের নিকট কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহ্ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী? তোমরা তাঁহাকে সম্পূর্ণ পশ্চাতে ফেলিয়া রাখিয়াছ। তোমরা যাহা কর আমার প্রতিপালক অবশ্যই তাহা পরিবেষ্টন করিয়া আছেন। (১১:৯২)
‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা স্ব স্ব অবস্থায় কাজ করিতে থাক, আমিও আমার কাজ করিতেছি। তোমরা শীঘ্রই জানিতে পারিবে কাহার উপর আসিবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রতীক্ষা করিতেছি।’ (১১:৯৩)
যখন আমার নির্দেশ আসিল তখন আমি শু‘আয়ব ও তাহার সঙ্গে যাহারা ঈমান আনিয়াছিল তাহাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করিয়াছিলাম। অতঃপর যাহারা সীমালংঘন করিয়াছিল মহানাদ তাহাদেরকে আঘাত করিল, ফলে উহারা নিজ নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় পড়িয়া রহিল, (১১:৯৪)
যেন তাহারা সেখানে কখনও বসবাস করে নাই। জানিয়া রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদ্ইয়ান-বাসীদের পরিণাম, যেভাবে ধ্বংস হইয়াছিল সামূদ সম্প্রদায়। (১১:৯৫)
আয়কাবাসীরা রাসূলগণকে অস্বীকার করিয়াছিল, (২৬:১৭৬)
যখন শু‘আয়ব উহাদেরকে বলিয়াছিল, তোমরা কি সাবধান হইবে না? (২৬:১৭৭)
‘আমি তো তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল। (২৬:১৭৮)
‘সুতরাং তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর ও আমার আনুগত্য কর। (২৬:১৭৯)
‘আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না। আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। (২৬:১৮০)
‘তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দিবে; যাহারা মাপে ঘাটতি করে তোমরা তাহাদের অন্তর্ভুক্ত হইও না। (২৬:১৮১)
‘এবং ওজন করিবে সঠিক দাঁড়িপাল্লায়। (২৬:১৮২)
‘লোকদেরকে তাহাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিবে না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাইবে না। (২৬:১৮৩)
‘এবং ভয় কর তাঁহাকে যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্বে যাহারা গত হইয়াছে তাহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন।’ (২৬:১৮৪)
উহারা বলিল, ‘তুমি তো জাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত; (২৬:১৮৫)
‘তুমি আমাদের মতই একজন মানুষ। আমরা মনে করি, তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্যতম। (২৬:১৮৬)
‘তুমি যদি সত্যবাদী হও তবে আকাশের এক খণ্ড আমাদের উপর ফেলিয়া দাও।’ (২৬:১৮৭)
সে বলিল, ‘আমার প্রতিপালক ভাল জানেন তোমরা যাহা কর।’ (২৬:১৮৮)
অপঃপর উহারা তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিল, পরে উহাদের মেঘাচ্ছন্ন দিবসের শাস্তি গ্রাস করিল। ইহা তো ছিল এক ভীষণ দিবসের শাস্তি! (২৬:১৮৯)
ইহাতে অবশ্যই রহিয়াছে নিদর্শন, কিন্তু উহাদের অধিকাংশই মু’মিন নহে। (২৬:১৯০)
এবং তোমার প্রতিপালক, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (২৬:১৯১)
আমি মাদ্ইয়ানবাসীদের প্রতি তাহাদের ভ্রাতা শু‘আয়বকে পাঠাইয়াছিলাম। সে বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর, শেষ দিবসকে ভয় কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটাইও না।’ (২৯:৩৬)
কিন্তু উহারা তাহার প্রতি মিথ্যা আরোপ করিল; অতঃপর উহারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হইল; ফলে উহারা নিজ গৃহে নতজানু অবস্থায় শেষ হইয়া গেল। (২৯:৩৭)