দয়াময় আল্লাহ্, (৫৫:১)
তিনিই শিক্ষা দিয়াছেন কুরআন, (৫৫:২)
তিনিই সৃষ্টি করিয়াছেন মানুষ, (৫৫:৩)
তিনিই তাহাকে শিখাইয়াছেন ভাব প্রকাশ করিতে, (৫৫:৪)
সূর্য ও চন্দ্র আবর্তন করে নির্ধারিত কক্ষপথে, (৫৫:৫)
নক্ষত্ররাজী ও বৃক্ষাদি তাঁহারই সিজ্দায় রত রহিয়াছে, (৫৫:৬)
তিনি আকাশকে করিয়াছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করিয়াছেন মানদন্ড, (৫৫:৭)
যাহাতে তোমরা সীমালংঘন না কর মানদন্ডে। (৫৫:৮)
ওজনের ন্যায্য মান প্রতিষ্ঠিত কর এবং ওজনে কম দিও না। (৫৫:৯)
তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করিয়াছেন সৃষ্ট জীবের জন্য; (৫৫:১০)
ইহাতে রহিয়াছে ফলমূল এবং খর্জুর বৃক্ষ যাহার ফল আবরণযুক্ত, (৫৫:১১)
এবং খোসাবিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধ ফুল। (৫৫:১২)
অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:১৩)
মানুষকে তিনি সৃষ্টি করিয়াছেন পোড়া মাটির মত শুষ্ক মৃত্তিকা হইতে, (৫৫:১৪)
এবং জিনকে সৃষ্টি করিয়াছেন নির্ধূম অগ্নিশিখা হইতে। (৫৫:১৫)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:১৬)
তিনিই দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের নিয়ন্তা। (৫৫:১৭)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:১৮)
তিনি প্রবাহিত করেন দুই দরিয়া যাহারা পরস্পর মিলিত হয়, (৫৫:১৯)
কিন্তু উহাদের মধ্যে রহিয়াছে এক অন্তরাল যাহা উহারা অতিক্রম করিতে পারে না। (৫৫:২০)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:২১)
উভয় দরিয়া হইতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল। (৫৫:২২)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:২৩)
সমুদ্রে বিচরণশীল পর্বতপ্রমাণ নৌযানসমূহ তাঁহারই নিয়ন্ত্রণাধীন; (৫৫:২৪)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:২৫)
ভূপৃষ্ঠে যাহা কিছু আছে সমস্তই নশ্বর, (৫৫:২৬)
অবিনশ্বর কেবল তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমময়, মহানুভব; (৫৫:২৭)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:২৮)
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যাহারা আছে সকলেই তাঁহার নিকট প্রার্থী, তিনি প্রত্যহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যে রত। (৫৫:২৯)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৩০)
হে মানুষ ও জিন! আমি শীঘ্রই তোমাদের প্রতি মনোনিবেশ করিব, (৫৫:৩১)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৩২)
হে জিন ও মনুষ্য সম্প্রদায়! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সীমা তোমরা যদি অতিক্রম করিতে পার অতিক্রম কর, কিন্তু তোমরা অতিক্রম করিতে পারিবে না সনদ ব্যতিরেকে। (৫৫:৩৩)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৩৪)
তোমাদের প্রতি প্রেরিত হইবে অগ্নিশিখা ও ধূম্রপুঞ্জ, তখন তোমরা প্রতিরোধ করিতে পারিবে না। (৫৫:৩৫)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৩৬)
যেই দিন আকাশ বিদীর্ণ হইবে সেই দিন উহা রক্ত-রঙ্গে রঞ্জিত চর্মের রূপ ধারণ করিবে; (৫৫:৩৭)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৩৮)
সেই দিন না মানুষকে তাহার অপরাধ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হইবে, না জিনকে। (৫৫:৩৯)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৪০)
অপরাধীদের পরিচয় পাওয়া যাইবে উহাদের লক্ষণ হইতে, উহাদেরকে পাকড়াও করা হইবে মাথার ঝুঁটি ও পা ধরিয়া। (৫৫:৪১)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৪২)
ইহাই সেই জাহান্নাম, যাহা অপরাধীরা অবিশ্বাস করিত, (৫৫:৪৩)
উহারা জাহান্নামের অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করিবে। (৫৫:৪৪)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৪৫)
আর যে আল্লাহ্র সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তাহার জন্য রহিয়াছে দু্ইটি উদ্যান। (৫৫:৪৬)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৪৭)
উভয়ই বহু শাখা-পল্লববিশিষ্ট। (৫৫:৪৮)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৪৯)
উভয় উদ্যানে রহিয়াছে প্রবহমান দুই প্রস্রবণ; (৫৫:৫০)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৫১)
উভয় উদ্যানে রহিয়াছে প্রত্যেক ফল দুই দুই প্রকার। (৫৫:৫২)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৫৩)
সেখানে উহারা হেলান দিয়া বসিবে পুরু রেশমের আস্তরবিশিষ্ট ফরাশে, দুই উদ্যানের ফল হইবে নিকটবর্তী। (৫৫:৫৪)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৫৫)
সেই সকলের মাঝে রহিয়াছে বহু আনতনয়না, যাহাদেরকে পূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করে নাই। (৫৫:৫৬)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৫৭)
তাহারা যেন পদ্মরাগ ও প্রবাল। (৫৫:৫৮)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৫৯)
উত্তম কাজের জন্য উত্তম পুরস্কার ব্যতীত কী হইতে পারে? (৫৫:৬০)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৬১)
এই উদ্যানদ্বয় ব্যতীত আরও দুইটি উদ্যান রহিয়াছে। (৫৫:৬২)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৬৩)
ঘন সবুজ এই উদ্যান দুইটি। (৫৫:৬৪)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৬৫)
উভয় উদ্যানে আছে উচ্ছলিত দুই প্রস্রবণ। (৫৫:৬৬)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৬৭)
সেখানে রহিয়াছে ফলমূল-খর্জুর ও আনার। (৫৫:৬৮)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৬৯)
সেই উদ্যানসমূহের মাঝে রহিয়াছে সুশীলা, সুন্দরীগণ। (৫৫:৭০)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৭১)
তাহারা হূর, তাঁবুতে সুরক্ষিতা। (৫৫:৭২)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৭৩)
ইহাদেরকে ইতিপূর্বে কোন মানুষ অথবা জিন স্পর্শ করে নাই। (৫৫:৭৪)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৭৫)
উহারা হেলান দিয়া বসিবে সবুজ তাকিয়ায় ও সুন্দর গালিচার উপরে। (৫৫:৭৬)
সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন্ অনুগ্রহ অস্বীকার করিবে? (৫৫:৭৭)
কত মহান তোমার প্রতিপালকের নাম যিনি মহিমময় ও মহানুভব! (৫৫:৭৮)
যখন কিয়ামত ঘটিবে, (৫৬:১)
ইহার সংঘটন অস্বীকার করিবার কেহ থাকিবে না। (৫৬:২)
ইহা কাহাকেও করিবে নীচ, কাহাকেও করিবে সমুন্নত; (৫৬:৩)
যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হইবে পৃথিবী (৫৬:৪)
এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া পড়িবে, (৫৬:৫)
ফলে উহা পর্যবসিত হইবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায়; (৫৬:৬)
এবং তোমরা বিভক্ত হইয়া পড়িবে তিন শ্রেণীতে- (৫৬:৭)
ডান দিকের দল; কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল! (৫৬:৮)
এবং বাম দিকের দল; কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! (৫৬:৯)
আর অগ্রবর্তীগণই তো অগ্রবর্তী, (৫৬:১০)
উহারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত- (৫৬:১১)
নিয়ামতপূর্ণ উদ্যানে; (৫৬:১২)
বহুসংখ্যক হইবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হইতে; (৫৬:১৩)
এবং অল্পসংখ্যক হইবে পরবর্তীদের মধ্য হইতে। (৫৬:১৪)
স্বর্ণখচিত আসনে (৫৬:১৫)
উহারা হেলান দিয়া বসিবে, পরস্পর মুখোমুখি হইয়া। (৫৬:১৬)
তাহাদের সেবায় ঘোরাফেরা করিবে চির-কিশোরেরা (৫৬:১৭)
পানপাত্র, কুঁজা ও প্রস্রবণ-নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা লইয়া। (৫৬:১৮)
সেই সুরা পানে তাহাদের শিরঃপীড়া হইবে না, তাহারা জ্ঞানহারাও হইবে না- (৫৬:১৯)
এবং তাহাদের পসন্দমত ফলমূল, (৫৬:২০)
আর তাহাদের ঈস্পিত পাখির গোশ্ত লইয়া, (৫৬:২১)
আর তাহাদের জন্য থাকিবে আয়তলোচনা হূর, (৫৬:২২)
সুরক্ষিত মুক্তাসদৃশ, (৫৬:২৩)
তাহাদের কর্মের পুরস্কারস্বরূপ। (৫৬:২৪)
সেখানে তাহারা শুনিবে না কোন অসার অথবা পাপবাক্য, (৫৬:২৫)
‘সালাম’ আর ‘সালাম’ বাণী ব্যতীত। (৫৬:২৬)
আর ডানদিকের দল, কত ভাগ্যবান ডাকদিকের দল! (৫৬:২৭)
তাহারা থাকিবে এমন উদ্যানে, সেখানে আছে কণ্টকহীন কুলবৃক্ষ, (৫৬:২৮)
কাঁদি ভরা কদলী বৃক্ষ, (৫৬:২৯)
সম্প্রসারিত ছায়া, (৫৬:৩০)
সদা প্রবহমান পানি, (৫৬:৩১)
ও প্রচুর ফলমূল, (৫৬:৩২)
যাহা শেষ হইবে না ও যাহা নিষিদ্ধও হইবে না। (৫৬:৩৩)
আর সমুচ্চ শয্যাসমূহ; (৫৬:৩৪)
উহাদেরকে আমি সৃষ্টি করিয়াছি বিশেষরূপে- (৫৬:৩৫)
উহাদেরকে করিয়াছি কুমারী, (৫৬:৩৬)
সোহাগিনী ও সমবয়স্কা, (৫৬:৩৭)
ডানদিকের লোকদের জন্য। (৫৬:৩৮)
তাহাদের অনেকে হইবে পূর্ববর্তীদের মধ্য হইতে, (৫৬:৩৯)
এবং অনেকে হইবে পরবর্তীদের মধ্য হইতে। (৫৬:৪০)
আর বামদিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! (৫৬:৪১)
উহারা থাকিবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে, (৫৬:৪২)
কৃষ্ণবর্ণ ধূম্রের ছায়ায়, (৫৬:৪৩)
যাহা শীতল নয়, আরামদায়কও নয়। (৫৬:৪৪)
ইতিপূর্বে উহারা তো মগ্ন ছিল ভোগ-বিলাসে (৫৬:৪৫)
এবং উহারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপকর্মে। (৫৬:৪৬)
আর উহারা বলিত, ‘মরিয়া অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হইলেও কি উত্থিত হইব আমরা? (৫৬:৪৭)
‘এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও?’ (৫৬:৪৮)
বল, ‘অবশ্যই পূর্ববর্তিগণ ও পরবর্তিগণ- (৫৬:৪৯)
সকলকে একত্র করা হইবে এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে। (৫৬:৫০)
অতঃপর হে বিভ্রান্ত অস্বীকারকারীরা! (৫৬:৫১)
তোমরা অবশ্যই আহার করিবে যাক্কূম বৃক্ষ হইতে, (৫৬:৫২)
এবং উহা দ্বারা তোমরা উদর পূর্ণ করিবে, (৫৬:৫৩)
পরে তোমরা পান করিবে উহার উপর অত্যুষ্ণ পানি- (৫৬:৫৪)
আর পান করিবে তৃষ্ণার্ত উষ্ট্রের ন্যায়। (৫৬:৫৫)
কিয়ামতের দিন ইহাই হইবে উহাদের আপ্যায়ন। (৫৬:৫৬)
আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি, তবে কেন তোমরা বিশ্বাস করিতেছ না? (৫৬:৫৭)
তোমরা কি ভাবিয়া দেখিয়াছ তোমাদের বীর্যপাত সম্বন্ধে? (৫৬:৫৮)
উহা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি? (৫৬:৫৯)
আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নির্ধারিত করিয়াছি এবং আমি অক্ষম নই- (৫৬:৬০)
তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করিতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করিতে যাহা তোমরা জান না। (৫৬:৬১)
তোমরা তো অবগত হইয়াছ প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন? (৫৬:৬২)
তোমরা যে বীজ বপন কর সে সম্পর্কে চিন্তা করিয়াছ কি? (৫৬:৬৩)
তোমরা কি উহাকে অঙ্কুরিত কর, না আমি অঙ্কুরিত করি? (৫৬:৬৪)
আমি ইচ্ছা করিলে ইহাকে খড়-কুটায় পরিণত করিতে পারি, তখন হতবুদ্ধি হইয়া পড়িবে তোমরা; (৫৬:৬৫)
‘আমরা তো দায়গ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছি’, (৫৬:৬৬)
বরং ‘আমরা হৃতসর্বস্ব হইয়া পড়িয়াছি।’ (৫৬:৬৭)
তোমরা যে পানি পান কর তাহা সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করিয়াছ? (৫৬:৬৮)
তোমরা কি উহা মেঘ হইতে নামাইয়া আন, না আমি উহা বর্ষণ করি? (৫৬:৬৯)
আমি ইচ্ছা করিলে উহা লবণাক্ত করিয়া দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? (৫৬:৭০)
তোমরা যে অগ্নি প্রজ্বলিত কর তাহা লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছ কি? (৫৬:৭১)
তোমরাই কি উহার বৃক্ষ সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি? (৫৬:৭২)
আমি ইহাকে করিয়াছি নিদর্শন এবং মরুচারীদের প্রয়োজনীয় বস্তু। (৫৬:৭৩)
সুতরাং তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (৫৬:৭৪)
আমি শপথ করিতেছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের, (৫৬:৭৫)
অবশ্যই ইহা এক মহাশপথ, যদি তোমরা জানিতে- (৫৬:৭৬)
নিশ্চয়ই ইহা সম্মানিত কুরআন, (৫৬:৭৭)
যাহা আছে সুরক্ষিত কিতাবে। (৫৬:৭৮)
যাহারা পূত-পবিত্র তাহারা ব্যতীত অন্য কেহ তাহা স্পর্শ করে না। (৫৬:৭৯)
ইহা জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট হইতে অবতীর্ণ। (৫৬:৮০)
তবুও কি তোমরা এই বাণীকে তুচ্ছ গণ্য করিবে? (৫৬:৮১)
এবং তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের উপজীব্য করিয়া লইয়াছ! (৫৬:৮২)
পরন্তু কেন নয়-প্রাণ যখন কণ্ঠাগত হয় (৫৬:৮৩)
এবং তখন তোমরা তাকাইয়া থাক, (৫৬:৮৪)
আর আমি তোমাদের অপেক্ষা তাহার নিকটতর, কিন্তু তোমরা দেখিতে পাও না। (৫৬:৮৫)
তোমরা যদি কর্তৃত্বাধীন না হও! (৫৬:৮৬)
তবে তোমরা উহা ফিরাও না কেন? যদি তোমরা সত্যবাদী হও। (৫৬:৮৭)
যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন হয়, (৫৬:৮৮)
তবে তাহার জন্য রহিয়াছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখদ উদ্যান; (৫৬:৮৯)
আর যদি সে ডানদিকের একজন হয়, (৫৬:৯০)
তবে তাহাকে বলা হইবে, ‘হে দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী! তোমার প্রতি শান্তি।’ (৫৬:৯১)
কিন্তু সে যদি সত্য অস্বীকারকারী ও বিভ্রান্তদের অন্যতম হয়, (৫৬:৯২)
তবে রহিয়াছে আপ্যায়ন অত্যুষ্ণ পানির দ্বারা, (৫৬:৯৩)
এবং দহন জাহান্নামের; (৫৬:৯৪)
ইহা তো ধ্রুব সত্য। (৫৬:৯৫)
অতএব তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (৫৬:৯৬)
কালপ্রবাহে মানুষের উপর তো এমন এক সময় আসিয়াছিল যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। (৭৬:১)
আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করিয়াছি মিলিত শুক্রবিন্দু হইতে, তাহাকে পরীক্ষা করিবার জন্য; এইজন্য আমি তাহাকে করিয়াছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন। (৭৬:২)
আমি তাহাকে পথের নির্দেশ দিয়াছি, হয় সে কৃতজ্ঞ হইবে, না হয় সে অকৃতজ্ঞ হইবে। (৭৬:৩)
আমি অকৃতজ্ঞদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি শৃংখল, বেড়ি ও লেলিহান অগ্নি। (৭৬:৪)
সৎকর্মশীলেরা পান করিবে এমন পানীয় যাহার মিশ্রণ কাফূর- (৭৬:৫)
এমন একটি প্রস্রবণ যাহা হইতে আল্লাহ্র বান্দাগণ পান করিবে, তাহারা এই প্রস্রবণকে যথা ইচ্ছা প্রবাহিত করিবে। (৭৬:৬)
তাহারা কর্তব্য পালন করে এবং সেই দিনের ভয় করে, যেই দিনের বিপত্তি হইবে ব্যাপক। (৭৬:৭)
আহার্যের প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও তাহারা অভাবগ্রস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে, (৭৬:৮)
এবং বলে, ‘কেবল আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি, আমরা তোমাদের নিকট হইতে প্রতি-দান চাই না, কৃতজ্ঞতাও নয়। (৭৬:৯)
‘আমরা আশংকা করি আমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের।’ (৭৬:১০)
পরিণামে আল্লাহ্ তাহাদেরকে রক্ষা করিবেন সেই দিবসের অনিষ্ট হইতে এবং তাহাদেরকে দিবেন উৎফুল্লতা ও আনন্দ, (৭৬:১১)
আর তাহাদের ধৈর্যশীলতার পুরস্কারস্বরূপ তাহাদেরকে দিবেন উদ্যান ও রেশমী বস্ত্র। (৭৬:১২)
সেখানে তাহারা সমাসীন হইবে সুসজ্জিত আসনে, তাহারা সেখানে অতিশয় গরম অথবা অতিশয় শীত বোধ করিবে না। (৭৬:১৩)
সন্নিহিত বৃক্ষছায়া তাহাদের উপর থাকিবে এবং উহার ফলমূল সম্পূর্ণরূপে তাহাদের আয়ত্তাধীন করা হইবে। (৭৬:১৪)
তাহাদেরকে পরিবেশন করা হইবে রৌপ্যপাত্রে এবং স্ফটিকের মত স্বচ্ছ পানপাত্রে- (৭৬:১৫)
রজতশুভ্র স্ফটিক পাত্রে, পরিবেশনকারীরা যথাযথ পরিমাণে উহা পূর্ণ করিবে। (৭৬:১৬)
সেখানে তাহাদেরকে পান করিতে দেওয়া হইবে যান্জাবীল মিশ্রিত পানীয়, (৭৬:১৭)
জান্নাতের এমন এক প্রস্রবণের যাহার নাম সালসাবীল। (৭৬:১৮)
তাহাদেরকে পরিবেশন করিবে চিরকিশোরগণ, যখন তুমি উহাদেরকে দেখিবে তখন মনে করিবে উহারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা, (৭৬:১৯)
তুমি যখন সেখানে দেখিবে, দেখিতে পাইবে ভোগ-বিলাসের উপকরণ এবং বিশাল রাজ্য। (৭৬:২০)
তাহাদের আবরণ হইবে সূক্ষ্ম সবুজ রেশম ও স্থূল রেশম, তাহারা অলংকৃত হইবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে, আর তাহাদের প্রতিপালকের তাহাদেরকে পান করাইবেন বিশুদ্ধ পানীয়। (৭৬:২১)
অবশ্য, ইহাই তোমাদের পুরস্কার এবং তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা স্বীকৃত। (৭৬:২২)
আমি তো তোমাদের প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি ক্রমে ক্রমে। (৭৬:২৩)
সুতরাং ধৈর্যের সঙ্গে তুমি তোমার প্রতিপালকের নির্দেশের প্রতীক্ষা কর এবং উহাদের মধ্যে যে পাপিষ্ঠ অথবা কাফির তাহার আনুগত্য করিও না। (৭৬:২৪)
এবং তোমার প্রতিপালকের নাম স্মরণ কর সকালে ও সন্ধ্যায়, (৭৬:২৫)
এবং রাত্রির কিয়দংশে তাঁহার প্রতি সিজ্দাবনত হও আর রাত্রির দীর্ঘ সময় তাঁহার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। (৭৬:২৬)
উহারা ভালবাসে পার্থিব জীবনকে এবং উহারা পরবর্তী কঠিন দিবসকে উপেক্ষা করিয়া চলে। (৭৬:২৭)
আমি উহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি এবং উহাদের গঠন সুদৃঢ় করিয়াছি। আমি যখন ইচ্ছা করিব উহাদের পরিবর্তে উহাদের অনুরূপ এক জাতিকে প্রতিষ্ঠা করিব। (৭৬:২৮)
ইহা এক উপদেশ, অতএব যাহার ইচ্ছা সে তাহার প্রতিপালকের দিকে পথ অবলম্বন করুক। (৭৬:২৯)
তোমরা ইচ্ছা করিবে না যদি না আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (৭৬:৩০)
তিনি যাহাকে ইচ্ছা তাঁহার অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত করেন, কিন্তু জালিমরা-উহাদের জন্য তো তিনি প্রস্তুত রাখিয়াছেন মর্মন্তুদ শাস্তি। (৭৬:৩১)