আল্লাহ্ যদি মানুষের অকল্যাণ ত্বরান্বিত করিতেন, যেভাবে তাহারা তাহাদের কল্যাণ ত্বরান্বিত করিতে চায়, তবে অবশ্যই তাহাদের মৃত্যু ঘটিত। সুতরাং যাহারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না তাহাদেরকে আমি তাহাদের অবাধ্যতায় উদ্ভ্রান্তের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়াইতে দেই। (১০:১১)
আর মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে শুইয়া, বসিয়া অথবা দাঁড়াইয়া আমাকে ডাকিয়া থাকে। অতঃপর আমি যখন তাহার দুঃখ-দৈন্য দূরীভূত করি, সে এমন পথ অবলম্বন করে, যেন তাহাকে যে দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করিয়াছিল তাহার জন্য সে আমাকে ডাকেই নাই। যাহারা সীমালংঘন করে তাহাদের কর্ম তাহাদের নিকট এইভাবে শোভনীয় করিয়া দেওয়া হইয়াছে। (১০:১২)
আর দুঃখ-দৈন্য তাহাদেরকে স্পর্শ করিবার পর, যখন আমি মানুষকে অনুগ্রহের আস্বাদন করাই তাহারা তখনই আামার নিদর্শনের বিরুদ্ধে অপকৌশল করে। বল, ‘আল্লাহ্ অপকৌশলের শাস্তিদানে দ্রুততর।’ তোমরা যে অপকৌশল কর তাহা অবশ্যই আমার ফিরিশ্তাগণ লিখিয়া রাখে। (১০:২১)
তিনিই তোমাদেরকে জলেস্থলে ভ্রমণ করান এবং তোমরা যখন নৌকারোহী হও এবং এইগুলি আরোহী লইয়া অনুকূলে বাতাসে বহিয়া যায় এবং তাহারা উহাতে আনন্দিত হয়; অতঃপর এইগুলি বাত্যাহত এবং সর্বদিক হইতে তরঙ্গাহত হয় এবং তাহারা উহা দ্বারা পরিবেষ্টত হইয়া পড়িয়াছে মনে করে, তখন তাহারা আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া আল্লাহ্কে ডাকিয়া বলে: ‘তুমি আমাদেরকে ইহা হইতে ত্রাণ করিলে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’ (১০:২২)
অতঃপর তিনি যখনই উহাদেরকে বিপদমুক্ত করেন তখনই উহারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে জুলুম করিতে থাকে। হে মানুষ! তোমাদের জুলুম বস্তুত তোমাদের নিজেদের প্রতিই হইয়া থাকে; পার্থিব জীবনের সুখ ভোগ করিয়া নাও, পরে আমারই নিকট তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানাইয়া দিব তোমরা যাহা করিতে। (১০:২৩)
আর যদি দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করিবার পর আমি তাহাকে সুখ-সম্পদ আস্বাদন করাই তখন সে অবশ্যই বলিবে, ‘আমার বিপদ-আপদ কাটিয়া গিয়াছি’, আর সে তো হয় উৎফুল্ল ও অহংকারী। (১১:১০)
তোমাদের নিকট যে সমস্ত নিয়ামত রহিয়াছে তাহা তো আল্লাহ্রই নিকট হইতে; আবার যখন দুঃখ-দৈন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁহাকেই ব্যাকুলভাবে আহ্বান কর। (১৬:৫৩)
আবার যখন আল্লাহ্ তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূরীভূত করেন তখন তোমাদের একদল উহাদের প্রতিপালকের শরীক করে- (১৬:৫৪)
আমি উহাদেরকে যাহা দান করিয়াছি তাহা অস্বীকার করিবার জন্য। সুতরাং ভোগ করিয়া লও, অচিরেই জানিতে পারিবে। (১৬:৫৫)
তোমাদের প্রতিপালক তিনিই যিনি তোমাদের জন্য সমুদ্রে নৌযান পরিচালিত করেন, যাহাতে তোমরা তাঁহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার। তিনি তো তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (১৭:৬৬)
সমুদ্রে যখন তোমাদেরকে বিপদ স্পর্শ করে তখন কেবল তিনি ব্যতীত অপর যাহাদেরকে তোমরা আহ্বান করিয়া থাক তাহারা অন্তর্হিত হইয়া যায়; অতঃপর তিনি যখন তোমাদেরকে উদ্ধার করিয়া স্থলে আনেন তখন তোমরা মুখ ফিরাইয়া নাও। মানুষ অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (১৭:৬৭)
তোমরা কি নির্ভয় হইয়াছ যে, তিনি তোমাদেরকেসহ কোন অঞ্চল ধসাইয়া দিবেন না অথবা তোমাদের উপর শিলা বর্ষণকারী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করিবেন না? তখন তোমরা তোমাদের কোন কর্মবিধায়ক পাইবে না। (১৭:৬৮)
অথবা তোমরা কি নির্ভয় হইয়াছ যে, তিনি তোমাদেরকে আর একবার সমুদ্রে লইয়া যাইবেন না এবং তোমাদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ঝটিকা পাঠাইবেন না এবং তোমাদের কুফরী করার জন্য তোমাদেরকে নিমজ্জিত করিবেন না? তখন তোমরা এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাইবে না। (১৭:৬৯)
আমি তো আদমসন্তানকে মর্যাদা দান করিয়াছি; স্থলে ও সমুদ্রে উহাদের চলাচলের বাহন দিয়াছি; উহাদেরকে উত্তম রিযিক দান করিয়াছি এবং আমি যাহাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি তাহাদের অনেকের উপর উহাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছি। (১৭:৭০)
মানুষকে যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন উহারা বিশুদ্ধচিত্তে উহাদের প্রতিপালককে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন উহাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ আস্বাদন করান তখন উহাদের একদল উহাদের প্রতিপালকের শরীক করিয়া থাকে; (৩০:৩৩)
আমি যখন মানুষকে অনুগ্রহের আস্বাদ দেই উহারা তাহাতে উৎফুল্ল হয় এবং উহাদের কৃতকর্মের ফলে দুর্দশাগ্রস্ত হইলেই উহারা হতাশ হইয়া পড়ে। (৩০:৩৬)
তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ্র অনুগ্রহে নৌযানগুলি সমুদ্রে বিচরণ করে, যদ্দ্বারা তিনি তোমাদেরকে তাঁহার নিদর্শনাবলীর কিছু প্রদর্শন করেন? ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞ ব্যক্তির জন্য। (৩১:৩১)
যখন তরংগ উহাদেরকে আচ্ছন্ন করে মেঘচ্ছায়ার মত তখন উহারা আল্লাহ্কে ডাকে তাহার আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হইয়া। কিন্তু যখন তিনি উহাদেরকে উদ্ধার করিয়া স্থলে পৌঁছান তখন উহাদের কেহ কেহ সরল পথে থাকে; কেবল বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞ ব্যক্তিই আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে। (৩১:৩২)
মানুষের যখন দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে একনিষ্ঠভাবে তাহার প্রতিপালককে ডাকে। পরে যখন তিনি তাহার প্রতি অনুগ্রহ করেন তখন সে বিস্মৃত হইয়া যায়, তাহার পূর্বে যাহার জন্য সে ডাকিয়াছিল তাঁহাকে এবং সে আল্লাহ্র সমকক্ষ দাঁড় করায়, অপরকে তাঁহার পথ হইতে বিভ্রান্ত করিবার জন্য। বল, ‘কুফরীর জীবন অবস্থায় তুমি কিছুকাল উপভোগ করিয়া নাও। বস্তুত তুমি জাহান্নামীদের অন্যতম।’ (৩৯:৮)
মানুষকে বিপদ-আপদ স্পর্শ করিলে সে আমাকে আহ্বান করে; অতঃপর যখন আমি আমার কোন নিয়ামত দ্বারা তাহাকে অনুগৃহীত করি তখন সে বলে, ‘আমাকে তো ইহা দেওয়া হইয়াছে আমার জ্ঞানের কারণে।’ বস্তুত ইহা এক পরীক্ষা, কিন্তু উহাদের অধিকাংশই বুঝে না। (৩৯:৪৯)
ইহাদের পূর্ববর্তিগণও ইহাই বলিত, কিন্তু উহাদের কৃতকর্ম উহাদের কোন কাজে আসে নাই। (৩৯:৫০)
উহাদের কৃতকর্মের মন্দ ফল উহাদের উপর আপতিত হইয়াছে, উহাদের মধ্যে যাহারা জুলুম করে উহাদের উপরও উহাদের কৃতকর্মের মন্দ ফল আপতিত হইবে এবং উহারা ব্যর্থও করিতে পারিবে না। (৩৯:৫১)
ইহারা কি জানে না, আল্লাহ্ যাহার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করেন অথবা যাহার জন্য ইচ্ছা সীমিত করেন? ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য। (৩৯:৫২)
মানুষ ধন-সম্পদ প্রার্থনায় কোন ক্লান্তি বোধ করে না, কিন্তু যখন তাহাকে দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে নিরাশ ও হতাশ হইয়া পড়ে; (৪১:৪৯)
দুঃখ-দৈন্য স্পর্শ করিবার পর যদি আমি তাহাকে অনুগ্রহ আস্বাদন করাই তখন সে অবশ্যই বলিয়া থাকে, ‘ইহা আমার প্রাপ্য এবং আমি মনে করি না যে, কিয়ামত সংঘটিত হইবে, আর আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তিত হইও তাঁহার নিকট তো আমার জন্য কল্যাণই থাকিবে।’ আমি কাফিরদেরকে উহাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবশ্যই অবহিত করিব এবং উহাদেরকে আস্বাদন করাইবই কঠোর শাস্তি। (৪১:৫০)
যখন আমি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরাইয়া নেয় ও দূরে সরিয়া যায় এবং তাহাকে অনিষ্ট স্পর্শ করিলে সে তখন দীর্ঘ প্রার্থনায় রত হয়। (৪১:৫১)
বল, ‘তোমরা ভাবিয়া দেখিয়াছ কি, যদি এই কুরআন আল্লাহ্র নিকট হইতে অবতীর্ণ হইয়া থাকে আর তোমরা ইহা প্রত্যাখ্যান কর, তবে যে ব্যক্তি ঘোর বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত আছে, তাহার অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে?’ (৪১:৫২)
তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তাহা তো তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তো তিনি ক্ষমা করিয়া দেন। (৪২:৩০)
উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া নেয়, তবে তোমাকে তো আমি ইহাদের রক্ষক করিয়া পাঠাই নাই। তোমার কাজ তো কেবল বাণী পৌঁছাইয়া দেওয়া। আমি মানুষকে যখন অনুগ্রহ আস্বাদন করাই তখন সে ইহাতে উৎফুল্ল হয় এবং যখন উহাদের কৃতকর্মের জন্য উহাদের বিপদ-আপদ ঘটে তখন মানুষ হইয়া পড়ে অকৃতজ্ঞ। (৪২:৪৮)
পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে; আল্লাহ্র পক্ষে ইহা খুবই সহজ। (৫৭:২২)
ইহা এইজন্য যে, তোমরা যাহা হারাইয়াছ তাহাতে যেন তোমরা বিমর্ষ না হও, এবং যাহা তিনি তোমাদেরকে দিয়াছেন তাহার জন্য হর্ষোৎফুল্ল না হও। আল্লাহ্ পসন্দ করেন না উদ্ধত ও অহংকারীদেরকে- (৫৭:২৩)
আল্লাহ্র অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিপদই আপতিত হয় না এবং যে আল্লাহ্কে বিশ্বাস করে তিনি তাহার অন্তরকে সুপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। (৬৪:১১)
আমি উহাদেরকে পরীক্ষা করিয়াছি, যেভাবে পরীক্ষা করিয়াছিলাম উদ্যান-অধিপতিগণকে, যখন উহারা শপথ করিয়াছিল যে, উহারা প্রত্যূষে আহরণ করিবে বাগানের ফল, (৬৮:১৭)
এবং তাহারা ‘ইন্শাআল্লাহ্’ বলে নাই। (৬৮:১৮)
অতঃপর তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে এক বিপর্যয় হানা দিল সেই উদ্যানে, যখন উহারা ছিল নিদ্রিত। (৬৮:১৯)
মানুষ তো সৃজিত হইয়াছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে। (৭০:১৯)
যখন বিপদ তাহাকে স্পর্শ করে সে হয় হা-হুতাশকারী। (৭০:২০)
আর যখন কল্যণ তাহাকে স্পর্শ করে সে হয় অতি কৃপণ; (৭০:২১)
তবে সালাত আদায়কারীগণ ব্যতীত, (৭০:২২)
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, (৭০:২৩)