সিয়ামের রাত্রে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হইয়াছে। তাহারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাহাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করিতেছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হইয়াছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করিয়াছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাহাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ্ যাহা তোমাদের জন্য নির্ধারণ করিয়াছেন তাহা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হইতে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। তোমরা মসজিদে ই‘তিকাফরত অবস্থায় তাহাদের সঙ্গে সংগত হইও না। এইগুলি আল্লাহ্র সীমারেখা। সুতরাং এইগুলির নিকটবর্তী হইও না। এইভাবে আল্লাহ্ তাঁহার বিধানাবলী মানব জাতির জন্য সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন, যাহাতে তাহারা মুত্তাকী হইতে পারে। (২:১৮৭)
লোকে তোমাকে রজঃস্রাব সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করে। বল, ‘উহা অশুচি।’ সুতরাং তোমরা রজঃস্রাবকালে স্ত্রী-সংগম বর্জন করিবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী-সংগম করিবে না। অতঃপর তাহারা যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হইবে তখন তাহাদের নিকট ঠিক সেইভাবে গমন করিবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে আদেশ দিয়াছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবাকারীকে ভালবাসেন এবং যাহারা পবিত্র থাকে তাহাদেরকেও ভালবাসেন। (২:২২২)
তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। অতএব, তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করিতে পার। তোমরা তোমাদের ভবিষ্যতের জন্য কিছু করিও এবং আল্লাহ্কেও ভয় করিও। আর জানিয়া রাখিও যে, তোমরা আল্লাহ্র সম্মুখীন হইতে যাইতেছ এবং মু’মিনগণকে সুসংবাদ দাও। (২:২২৩)
যে স্তন্যপানকাল পূর্ণ করিতে চাহে তাহার জন্য জননীগণ তাহাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বৎসর স্তন্যপান করাইবে। জনকের কর্তব্য যথাবিধি তাহাদের ভরণ-পোষণ করা। কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত কার্যভার দেওয়া হয় না। কোন জননীকে তাহার সন্তানের জন্য এবং কোন জনককে তাহার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হইবে না। এবং উত্তরাধিকারীরও অনুরূপ কর্তব্য। কিন্তু যদি তাহারা পরস্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্যপান বন্ধ রাখিতে চায় তবে তাহাদের কাহারও কোন অপরাধ নাই। তোমরা যাহা বিধিমত দিতে চাহিয়াছিলে, তাহা যদি অর্পণ কর তবে ধাত্রী দ্বারা তোমাদের সন্তানকে স্তন্যপান করাইতে চাহিলে তোমাদের কোন গুনাহ নাই। আল্লাহ্কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ উহার সম্যক দ্রষ্টা। (২:২৩৩)
তিনিই তোমাদেরকে এক ব্যক্তি হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন ও উহা হইতে তাহার স্ত্রী সৃষ্টি করেন যাহাতে সে তাহার নিকট শান্তি পায়। অতঃপর যখন সে তাহার সঙ্গে সংগত হয় তখন সে এক লঘু গর্ভধারণ করে এবং ইহা লইয়া সে অনায়াসে চলাফেলা করে। গর্ভ যখন গুরুভার হয় তখন তাহারা উভয়ে তাহাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র নিকট প্রার্থনা করে, ‘যদি তুমি আমাদেরকে এক পূর্ণাঙ্গ সন্তান দাও তবে তো আমরা কৃতজ্ঞ থাকিবই।’ (৭:১৮৯)
প্রত্যেক নারী যাহা গর্ভে ধারণ করে এবং জরায়ুতে যাহা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ্ তাহা জানেন এবং তাঁহার বিধানে প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। (১৩:৮)
এবং আল্লাহ্ তোমাদেরকে বাহির করিয়াছেন তোমাদের মাতৃগর্ভ হইতে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানিতে না। তিনি তোমাদের দিয়াছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাহাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। (১৬:৭৮)
হে মানুষ! পুনরুত্থান সম্বন্ধে যদি তোমরা সন্দিগ্ধ হও তবে অবধান কর-আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছি মৃত্তিকা হইতে, তাহার পর শুক্র হইতে, তাহার পর ‘আলাকা’ হইতে, তাহার পর পূর্ণাকৃতি অথবা অপূর্ণাকৃতি গোশ্তপিন্ড হইতে- তোমাদের নিকট ব্যক্ত করিবার জন্য, আমি যাহা ইচ্ছা করি তাহা এক নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে স্থিত রাখি, তাহার পর আমি তোমাদেরকে শিশুরূপে বাহির করি, পরে যাহাতে তোমরা পরিণত বয়সে উপনীত হও। তোমাদের মধ্যে কাহারও কাহারও মৃত্যু ঘটান হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাহাকেও কাহাকেও প্রত্যাবৃত্ত করা হয় হীনতম বয়সে, যাহার ফলে উহারা যাহা কিছু জানিত সে সম্বন্ধে উহারা সজ্ঞান থাকে না। তুমি ভূমিকে দেখ শুষ্ক, অতঃপর উহাতে আমি বারি বর্ষণ করিলে উহা শস্য-শ্যামলা হইয়া আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদ্গত করে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ; (২২:৫)
আর তাঁহার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রহিয়াছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন তোমাদের সংগিনীদেরকে যাহাতে তোমরা উহাদের নিকট শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পারিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করিয়াছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য ইহাতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রহিয়াছে। (৩০:২১)
আমি তো মানুষকে তাহার পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়াছি। জননী সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করিয়া গর্ভে ধারণ করে এবং তাহার দুধ ছাড়ান হয় দুই বৎসরে। সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। প্রত্যাবর্তন তো আমারই নিকট। (৩১:১৪)
কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্র নিকট রহিয়াছে, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনি জানেন যাহা জরায়ুতে আছে। কেহ জানে না আগামীকল্য সে কি অর্জন করিবে এবং কেহ জানে না কোন্ স্থানে তাহার মৃত্যু ঘটিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত। (৩১:৩৪)
আল্লাহ্ তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন মৃত্তিকা হইতে; অতঃপর শুক্রবিন্দু হইতে, অতঃফর তোমাদেরকে করিয়াছেন যুগল! আল্লাহ্র অজ্ঞাতসারে কোন নারী গর্ভধারণ করে না এবং প্রসবও করে না। কোন দীর্ঘায়ু ব্যক্তির আয়ু বৃদ্ধি করা হয় না এবং তাহার আয়ু হ্রাস করা হয় না, কিন্তু তাহা তো রহিয়াছে ‘কিতাবে’। ইহা আল্লাহ্র জন্য সহজ। (৩৫:১১)
কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্তেই ন্যস্ত, তাঁহার অজ্ঞাতসারে কোন ফল আবরণ হইতে বাহির হয় না, কোন নারী গর্ভ ধারণ করে না এবং সন্তানও প্রসব করে না। যেদিন আল্লাহ্র উহাদেরকে ডাকিয়া বলিবেন, ‘আমার শরীকেরা কোথায়?’ তখন উহারা বলিবে, ‘আমরা আপনার নিকট নিবেদন করি যে, এই ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।’ (৪১:৪৭)
আমি মানুষকে তাহার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়াছি। তাহার জননী তাহাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সঙ্গে এবং প্রসব করে কষ্টের সঙ্গে, তাহাকে গর্ভে ধারণ করিতে ও তাহার স্তন্য ছাড়াইতে লাগে ত্রিশ মাস, ক্রমে সে যখন পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বৎসরে উপনীত হয় তখন বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাহাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করিয়াছ, তাহার জন্য এবং যাহাতে আমি সৎকর্ম করিতে পারি যাহা তুমি পসন্দ কর; আমার জন্য আমার সন্তান-সন্ততিদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমারই অভিমুখী হইলাম এবং আমি অবশ্যই আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত। (৪৬:১৫)
উহারাই বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কার্য হইতে, ছোটখাট অপরাধ করিলেও। তোমার প্রতিপালকের ক্ষমা অপরিসীম; আল্লাহ্ তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত-যখন তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছিলেন মৃত্তিকা হইতে এবং যখন তোমরা মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে ছিলে। অতএব তোমরা আত্মপ্রশংসা করিও না, তিনিই সম্যক জানেন মুত্তাকী কে। (৫৩:৩২)
সে কি স্খলিত শুক্রবিন্দু ছিল না? (৭৫:৩৭)
অতঃপর সে ‘আলাকায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ্ তাহাকে আকৃতি দান করেন ও সুঠাম করেন। (৭৫:৩৮)
আমি কি তোমাদেরকে তুচ্ছ পানি হইতে সৃষ্টি করি নাই? (৭৭:২০)
অতঃপর আমি উহা রাখিয়াছি নিরাপদ আধারে, (৭৭:২১)
এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত, (৭৭:২২)
অতঃপর আমি ইহাকে গঠন করিয়াছি পরিমিতভাবে, আমি কত নিপুণ স্রষ্টা! (৭৭:২৩)