অবশ্যই সফলকাম হইয়াছে মু’মিনগণ, (২৩:১)
যাহারা বিনয়-নম্র নিজেদের সালাতে, (২৩:২)
যাহারা অসার ক্রিয়াকলাপ হইতে বিরত থাকে, (২৩:৩)
যাহারা যাকাতদানে সক্রিয়, (২৩:৪)
যাহারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে, (২৩:৫)
নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসিগণ ব্যতীত, ইহাতে তাহারা নিন্দনীয় হইবে না, (২৩:৬)
এবং কেহ ইহাদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করিলে তাহারা হইবে সীমালংঘনকারী, (২৩:৭)
এবং যাহারা নিজেদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, (২৩:৮)
এবং যাহারা নিজেদের সালাতসমূহে যত্নবান থাকে, (২৩:৯)
তাহারাই হইবে অধিকারী- (২৩:১০)
অধিকারী হইবে ফিরদাওসের যাহাতে উহারা স্থায়ী হইবে। (২৩:১১)
নিশ্চয় যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের ভয়ে সন্ত্রস্ত, (২৩:৫৭)
যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলীতে ঈমান আনে, (২৩:৫৮)
যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের সঙ্গে শরীক করে না, (২৩:৫৯)
এবং যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করিবে এই বিশ্বাসে তাহাদের যাহা দান করিবার তাহা দান করে ভীত-কম্পিত হৃদয়ে, (২৩:৬০)
তাহারাই দ্রুত সম্পাদন করে কল্যাণকর কাজ এবং তাহারা উহাতে অগ্রগামী হয়। (২৩:৬১)
আমি কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পণ করি না এবং আমার নিকট আছে এক কিতাব যাহা সত্য ব্যক্ত করে এবং উহাদের প্রতি জুলুম করা হইবে না। (২৩:৬২)
‘রাহমান’-এর বান্দা তাহারাই, যাহারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাহাদেরকে যখন অজ্ঞ ব্যক্তিরা সম্বোধন করে, তখন তাহারা বলে, ‘সালাম’; (২৫:৬৩)
এবং তাহারা রাত্রি অতিবাহিত করে তাহাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজ্দাবনত হইয়া ও দন্ডায়মান থাকিয়া; (২৫:৬৪)
এবং তাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের হইতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত কর, উহার শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ,’ (২৫:৬৫)
নিশ্চয়ই উহা অস্থায়ী ও স্থায়ী আবাস হিসাবে নিকৃষ্ট। (২৫:৬৬)
এবং যখন তাহারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কার্পণ্যও করে না, বরং তাহারা আছে এতদুভয়ের মাঝে মধ্যম পন্থায়। (২৫:৬৭)
এবং তাহারা আল্লাহ্র সঙ্গে কোন ইলাহ্কে ডাকে না। আল্লাহ্ যাহার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাহাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে এইগুলি করে সে শাস্তি ভোগ করিবে। (২৫:৬৮)
কিয়ামতের দিন উহার শাস্তি দ্বিগুণ করা হইবে এবং সেখানে সে স্থায়ী হইবে হীন অবস্থায়; (২৫:৬৯)
তাহারা নয়, যাহারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। আল্লাহ্ উহাদের পাপ পরিবর্তন করিয়া দিবেন পুণ্যের দ্বারা। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (২৫:৭০)
যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকর্ম করে সে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্র অভিমুখী হয়। (২৫:৭১)
এবং যাহারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং অসার ক্রিয়াকলাপের সম্মুখীন হইলে স্বীয় মর্যাদার সঙ্গে উহা পরিহার করিয়া চলে। (২৫:৭২)
এবং যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের আয়াত স্মরণ করাইয়া দিলে উহার প্রতি অন্ধ এবং বধিরসদৃশ আচরণ করে না, (২৫:৭৩)
এবং যাহারা প্রার্থনা করে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দান কর যাহারা হইবে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর এবং আমাদেরকে কর মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য। (২৫:৭৪)
তাহাদেরকে প্রতিদান দেওয়া হইবে জান্নাতের সুউচ্চ কক্ষ যেহেতু তাহারা ছিল ধৈর্যশীল, তাহাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হইবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে। (২৫:৭৫)
সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে। আশ্রয়স্থল ও বসতি হিসাবে উহা কত উৎকৃষ্ট। (২৫:৭৬)
বল, ‘তোমরা আমার প্রতিপালককে না ডাকিলে তাঁহার কিছুই আসে যায় না। তোমরা অস্বীকার করিয়াছ, ফলে অচিরে নামিয়া আসিবে অপরিহার্য শাস্তি। (২৫:৭৭)
আমি তো উহাদের নিকট পরপর বাণী পৌঁছাইয়া দিয়াছি; যাহাতে উহারা উপদেশ গ্রহণ করে। (২৮:৫১)
ইহার পূর্বে আমি যাহাদেরকে কিতাব দিয়াছিলাম, তাহারা ইহাতে বিশ্বাস করে। (২৮:৫২)
যখন উহাদের নিকট ইহা আবৃত্তি করা হয় তখন উহারা বলে, ‘আমরা ইহাতে ঈমান আনি, নিশ্চয়ই ইহা আমাদের প্রতিপালক হইতে আগত সত্য। আমরা তো পূর্বেও আত্মসমর্পণকারী ছিলাম; (২৮:৫৩)
উহাদেরকে দুইবার পারিশ্রমিক প্রদান করা হইবে, যেহেতু উহারা ধৈর্যশীল এবং উহারা ভালর দ্বারা মন্দের মুকাবিলা করে ও আমি উহাদেরকে যে রিযিক দিয়াছি তাহা হইতে উহারা ব্যয় করে। (২৮:৫৪)
উহারা যখন অসার বাক্য শ্রবণ করে তখন উহারা তাহা উপেক্ষা করিয়া চলে এবং বলে, ‘আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য; তোমাদের প্রতি ‘সালাম’। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাহি না।’ (২৮:৫৫)
কেবল তাহারাই আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বাস করে যাহারা উহার দ্বারা উপদিষ্ট হইলে সিজ্দায় লুটাইয়া পড়ে এবং তাহাদের প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে আর তাহারা অহংকার করে না। (৩২:১৫)
তাহারা শয্যা ত্যাগ করিয়া তাহাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশংকায় এবং আমি তাহাদেরকে যে রিযিক দান করিয়াছি উহা হইতে তাহারা ব্যয় করে। (৩২:১৬)
যাহারা তাগূতের পূজা হইতে দূরে থাকে এবং আল্লাহ্র অভিমুখী হয়, তাহাদের জন্য আছে সুসংবাদ। অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদেরকে- (৩৯:17)
যাহারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন এবং উহারাই বোধশক্তিসম্পন্ন। (৩৯:১৮)
যাহারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্’, অতঃপর অবিচলিত থাকে, তাহাদের নিকট অবতীর্ণ হয় ফিরিশ্তা এবং বলে, ‘তোমরা ভীত হইও না, চিন্তিত হইও না এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হইয়াছিল তাহার জন্য আনন্দিত হও। (৪১:৩০)
‘আমরাই তোমাদের বন্ধু দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে। সেখানে তোমাদের জন্য রহিয়াছে যাহা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রহিয়াছে যাহা তোমরা ফর্মায়েশ কর।’ (৪১:৩১)
ইহা ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আল্লাহ্র পক্ষ হইতে আপ্যায়ন। (৪১:৩২)
মুহাম্মদ আল্লাহ্র রাসূল; তাঁহার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাহাদেরকে রুকূ‘ ও সিজ্দায় অবনত দেখিবে। তাহাদের লক্ষণ তাহাদের মুখমন্ডলে সিজ্দার প্রভাবে পরিস্ফুটিত থাকিবে; তওরাতে তাহাদের বর্ণনা এইরূপ এবং ইঞ্জীলেও তাহাদের বর্ণনা এইরূপই। তাহাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যাহা হইতে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর ইহা শক্ত ও পুষ্ঠ হয় এবং পরে কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যাহা চাষীর জন্য আনন্দদায়ক। এইভাবে আল্লাহ্ মু’মিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন ক্ষমা ও মহাপুস্কারের। (৪৮:২৯)
সেদিন নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকিবে প্রস্রবণ-বিশিষ্ট জান্নাতে, (৫১:১৫)
উপভোগ করিবে তাহা যাহা তাহাদের প্রতিপালক তাহাদেরকে দিবেন; কারণ পার্থিব জীবনে তাহারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ, (৫১:১৬)
তাহারা রাত্রির সামান্য অংশই অতিবাহিত করিত নিদ্রায়, (৫১:১৭)
রাত্রির শেষ প্রহরে তাহারা ক্ষমা প্রার্থনা করিত, (৫১:১৮)
এবং তাহাদের ধন-সম্পদে রহিয়াছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতের হক। (৫১:১৯)
নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শন রহিয়াছে ধরিত্রীতে (৫১:২০)
তুমি পাইবে না আল্লাহ্ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায়, যাহারা ভালবাসে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে-হউক না এই বিরুদ্ধাচারীরা তাহাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা ইহাদের জ্ঞাতি-গোত্র। ইহাদের অন্তরে আল্লাহ্ সুদৃঢ় করিয়াছেন ঈমান এবং তাহাদেরকে শক্তিশালী করিয়াছেন তাঁহার পক্ষ হইতে রূহ্ দ্বারা। তিনি ইহাদেরকে দাখিল করিবেন জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে ইহারা স্থায়ী হইবে; আল্লাহ্ ইহাদের প্রতি সন্তুষ্ট হইয়াছেন এবং ইহারাও তাঁহার প্রতি সন্তুষ্ট, ইহারাই আল্লাহ্র দল। জানিয়া রাখ, আল্লাহ্র দলই সফলকাম হইবে। (৫৮:২২)
তোমাদের জন্য ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারীদের মধ্যে রহিয়াছে উত্তম আদর্শ। যখন তাহারা তাহাদের সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, ‘তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাহার ‘ইবাদত কর তাহার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হইল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যদি না তোমরা এক আল্লাহ্তে ঈমান আন।’ তবে ব্যতিক্রম তাহার পিতার প্রতি ইব্রাহীমের উক্তি: ‘আমি নিশ্চয়ই তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিব; এবং তোমার ব্যাপারে আল্লাহ্র নিকট আমি কোন অধিকার রাখি না।’ ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারিগণ বলিয়াছিল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমারই উপর নির্ভর করিয়াছি, তোমারই অভিমুখী হইয়াছি এবং প্রত্যাবর্তন তো তোমারই নিকট। (৬০:৪)
‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের পাত্র করিও না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর; তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (৬০:৫)
তোমরা যাহারা আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রত্যাশা কর নিশ্চয়ই তাহাদের জন্য রহিয়াছে উত্তম আদর্শ তাহাদের মধ্যে। কেহ মুখ ফিরাইয়া লইলে সে জানিয়া রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্, তিনি তো অভাবমুক্ত, প্রশংসার্হ। (৬০:৬)
হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্র দীনের সাহায্যকারী হও, যেমন মার্ইয়াম-তনয় ঈসা হাওয়ারীগণকে বলিয়াছিল, ‘আল্লাহ্র পথে কে আমার সাহায্যকারী হইবে?’ হাওয়ারীগণ বলিয়াছিল, ‘আমরাই আল্লাহ্র পথে সাহায্যকারী।’ অতঃপর বনী ইস্রাঈলের একদল ঈমান আনিল এবং একদল কুফরী করিল। তখন আমি যাহারা ঈমান আনিয়াছিল, তাহাদের শত্রুদের মুকাবিলায় তাহাদেরকে শক্তিশালী করিলাম, ফলে তাহারা বিজয়ী হইল। (৬১:১৪)