অতঃপর উহারা সাক্ষাৎ পাইল আমার বান্দাদের মধ্যে একজনের, যাহাকে আমি আমার নিকট হইতে অনুগ্রহ দান করিয়াছিলাম ও আমার নিকট হইতে শিক্ষা দিয়াছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান। (১৮:৬৫)
মূসা তাহাকে বলিল, ‘সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হইয়াছে তাহা হইতে আমাকে শিক্ষা দিবেন, এই শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করিব কি? (১৮:৬৬)
সে বলিল, ‘আপনি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্য ধারণ করিয়া থাকিতে পারিবেন না, (১৮:৬৭)
‘যে বিষয় আপনার জ্ঞানায়ত্ত নহে সে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করিবেন কেমন করিয়া?’ (১৮:৬৮)
মূসা বলিল, ‘আল্লাহ্ চাহিলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাইবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করিব না।’ (১৮:৬৯)
সে বলিল, ‘আচ্ছা, আপনি যদি আমার অনুসরণ করিবেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করিবেন না, যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে আপনাকে কিছু বলি।’ (১৮:৭০)
অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল, পরে যখন উহারা নৌকায় আরোহণ করিল তখন সে উহা বিদীর্ণ করিয়া দিল। মূসা বলিল, ‘আপনি কি আরোহীদেরকে নিমজ্জিত করিয়া দিবার জন্য উহা বিদীর্ণ করিলেন? আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করিলেন।’ (১৮:৭১)
সে বলিল, ‘আমি কি বলি নাই যে, আপনি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করিতে পারিবেন না?’ (১৮:৭২)
মূসা বলিল, ‘আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করিবেন না ও আমার ব্যাপারে অত্যধিক কঠোরতা অবলম্বন করিবেন না।’ (১৮:৭৩)
অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল, চলিতে চলিতে উহাদের সঙ্গে এক বালকের সাক্ষাৎ হইলে সে উহাকে হত্যা করিল। তখন মূসা বলিল, ‘আপনি কি এক নিষ্পাপ জীবন নাশ করিলেন, হত্যার অপরাধ ছাড়াই? আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করিলেন। (১৮:৭৪)
সে বলিল, ‘আমি কি আপনাকে বলি নাই যে, আপনি আমার সঙ্গে কিছুতেই ধৈর্য ধারণ করিতে পারিবেন না? (১৮:৭৫)
মূসা বলিল, ‘ইহার পর, যদি আমি আপনাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি তবে আপনি আমাকে সঙ্গে রাখিবেন না; আমার ‘ওযর-আপত্তির চূড়ান্ত হইয়াছে। (১৮:৭৬)
অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল; চলিতে চলিতে উহারা এক জনপদের অধিবাসীদের নিকট পৌঁছিয়া তাহাদের নিকট খাদ্য চাহিল; কিন্তু তাহারা তাহাদের মেহমানদারী করিতে অস্বীকার করিল। অতঃপর সেখানে তাহারা এক পতনোন্মুখ প্রাচীর দেখিতে পাইল এবং সে উহাকে সুদৃঢ় করিয়া দিল। মূসা বলিল, ‘আপনি তো ইচ্ছা করিলে ইহার জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ করিতে পারিতেন।’ (১৮:৭৭)
সে বলিল, ‘এইখানেই আপনার এবং আমার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হইল, যে বিষয় আপনি ধৈর্য ধারণ করিতে পারেন নাই আমি তাহার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করিতেছি। (১৮:৭৮)
‘নৌকাটির ব্যাপার-ইহা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যক্তির, উহারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করিত; আমি, ইচ্ছা করিলাম নৌকাটিকে ক্রুটিযুক্ত করিতে; কারণ উহাদের পশ্চাতে ছিল এক রাজা, যে বলপ্রয়োগে নৌকাসকল ছিনাইয়া লইত। (১৮:৭৯)
‘আর কিশোরটি, তাহার পিতামাতা ছিল মু’মিন। আমি আশংকা করিলাম যে, সে বিদ্রোহাচরণ ও কুফরীর দ্বারা উহাদেরকে বিব্রত করিবে। (১৮:৮০)
‘অতঃপর আমি চাহিলাম যে, উহাদের প্রতিপালক যেন উহাদেরকে উহার পরিবর্তে এক সন্তান দান করেন, যে হইবে পবিত্রতায় মহত্তর ও ভক্তি-ভালবাসায় ঘনিষ্ঠতর। (১৮:৮১)
‘আর ঐ প্রাচীরটি, ইহা ছিল নগরবাসী দুই পিতৃহীন কিশোরের, ইহার নিম্নদেশে আছে উহাদের গুপ্তধন এবং উহাদের পিতা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। সুতরাং আপনার প্রতিপালক দয়াপরবশ হইয়া ইচ্ছা করিলেন যে, উহারা বয়ঃপ্রাপ্ত হউক এবং উহারা উহাদের ধনভান্ডার উদ্ধার করুক। আমি নিজ হইতে কিছু করি নাই; আপনি যে বিষয়ে ধৈর্য ধারণে অপারগ হইয়াছিলেন, ইহাই তাহার ব্যাখ্যা।’ (১৮:৮২)
এবং যাহাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছিল তাহারা বলিল, ‘ধিক তোমাদেরকে! যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আল্লাহ্র পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ব্যতীত ইহা কেহ পাইবে না।’ (২৮:৮০)
যাহাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে তাহারা জানে যে, তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাই সত্য; ইহা পরাক্রমশালী প্রশংসার্হ আল্লাহ্র পথনির্দেশ করে। (৩৪:৬)