হজ্জ হয় সুনির্দিষ্ট মাসসমূহে। অতঃপর যে কেহ এই মাসগুলিতে হজ্জ করা স্থির করে তাহার জন্য হজ্জের সময়ে স্ত্রী-সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ-বিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজের যাহা কিছু কর আল্লাহ্ তাহা জানেন এবং তোমরা পাথেয়ের ব্যবস্থা করিও, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ! তোমরা আমাকে ভয় কর। (২:১৯৭)
তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ সন্ধান করাতে তোমাদের কোন পাপ নাই। যখন তোমরা ‘আরাফাত হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে তখন মাশ‘আরুল হারামের নিকট পৌঁছিয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করিবে এবং তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়াছেন ঠিক সেই ভাবে স্মরণ করিবে; যদিও ইতিপূর্বে তোমরা বিভ্রান্তদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। (২:১৯৮)
অতঃপর অন্যান্য লোক যেখান হইতে প্রত্যাবর্তন করে তোমরাও সেই স্থান হইতে প্রত্যাবর্তন করিবে। আর আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (২:১৯৯)
অতঃপর যখন তোমরা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করিবে তখন আল্লাহ্কে এমনভাবে স্মরণ করিবে যেমন তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষগণকে স্মরণ করিতে, অথবা তদপেক্ষা অভিনিবেশ সহকারে। মানুষের মধ্যে যাহারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালেই দাও’, বস্তুত পরকালে তাহাদের জন্য কোন অংশ নাই। (২:২০০)
উহাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন মাকামে ইব্রাহীম। আর যে কেহ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ। মানুষের মধ্যে যাহার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্জ করা তাহার অবশ্যকর্তব্য। এবং কেহ প্রত্যাখ্যান করিলে সে জানিয়া রাখুক, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন। (৩:৯৭)
হে মু’মিনগণ! তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ করিবে। যাহা তোমাদের নিকট বর্ণিত হইতেছে তাহা ব্যতীত চতুষ্পদ আন‘আম তোমাদের জন্য হালাল করা হইল, তবে হই্রাম অবস্থায় শিকার করাকে বৈধ মনে করিবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা আদেশ করেন। (৫:১)
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ্র নিদর্শনের, পবিত্র মাসের, কুরবানীর জন্য কা‘বায় প্রেরিত পশুর, গলায় পরান চিহ্নবিশিষ্ট পশুর এবং নিজ প্রতিপালকের অনুগ্রহ ও সন্তোষ লাভের আশায় পবিত্র গৃহ অভিমুখে যাত্রীদের পবিত্রতার অবমাননা করিবে না। যখন তোমরা ইহ্রামমুক্ত হইবে তখন শিকার করিতে পার। তোমাদেরকে মস্জিদুল হারামে প্রবেশে বাধা দেওয়ার কারণে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনই সীমালংঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও তাক্ওয়ায় তোমরা পরস্পর সহযোগিতা করিবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যের সহযোগিতা করিবে না। আল্লাহ্কে ভয় করিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শাস্তিদানে কঠোর। (৫:২)
হে মু’মিনগণ! ইহ্রামে থাকাকালে তোমরা শিকার-জন্তু হত্যা করিও না; তোমাদের মধ্যে কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে উহা হত্যা করিলে যাহা সে হত্যা করিল তাহার বিনিময় হইতেছে অনুরূপ গৃহপালিত জন্তু, যাহার ফয়সালা করিবে তোমাদের মধ্যে দুইজন ন্যায়বান লোক-কা‘বায় প্রেরিতব্য কুরবানীরূপে। অথবা উহার কাফ্ফারা হইবে দরিদ্রকে খাদ্য দান করা কিংবা সমসংখ্যক সিয়াম পালন করা, যাহাতে সে আপন কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। যাহা গত হইয়াছে আল্লাহ্ তাহা ক্ষমা করিয়াছেন। কেহ উহা পুনরায় করিলে আল্লাহ্র তাহার শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, শাস্তিদাতা। (৫:৯৫)
তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও উহা ভক্ষণ হালাল করা হইয়াছে, তোমাদের ও পর্যটকদের ভোগের জন্য। তোমরা যতক্ষণ ইহ্রামে থাকিবে ততক্ষণ স্থলের শিকার তোমাদের জন্য হারাম। তোমরা ভয় কর আল্লাহ্কে, যাঁহার নিকট তোমাদেরকে একত্র করা হইবে। (৫:৯৬)
মহান হজ্জের দিবসে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের পক্ষ হইতে মানুষের প্রতি ইহা এক ঘোষণা যে, নিশ্চয়ই মুশরিকদের সম্পর্কে আল্লাহ্ দায়মুক্ত এবং তাঁহার রাসূলও। তোমরা যদি তওবা কর তবে তাহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরাও তবে জানিয়া রাখ, তোমরা আল্লাহ্কে হীনবল করিতে পারিবে না এবং কাফিরদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও, (৯:৩)
এবং স্মরন কর, যখন আমি ইব্রাহীমের জন্য নির্ধারণ করিয়া দিয়াছিলাম সেই গৃহের স্থান, তখন বলিয়াছিলাম, ‘আমার সঙ্গে কোন শরীক স্থির করিও না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রাখিও তাহাদের জন্য যাহারা তাওয়াফ করে এবং যাহারা সালাতে দাঁড়ায়, রুকূ‘ করে ও সিজ্দা করে। (২২:২৬)
এবং মানুষের নিকট হজ্জ-এর ঘোষণা করিয়া দাও, উহারা তোমার নিকট আসিবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রের পিঠে, ইহারা আসিবে দূর-দূরান্তর পথ অতিক্রম করিয়া, (২২:২৭)
যাহাতে তাহারা তাহাদের কল্যাণময় স্থানগুলিতে উপস্থিত হইতে পারে এবং তিনি তাহাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হইতে যাহা রিযিক হিসাবে দান করিয়াছেন উহার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করিতে পারে। অতঃপর তোমরা উহা হইতে আহার কর এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার করাও। (২২:২৮)
অতঃপর তাহারা যেন তাহাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং তাহাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীর গৃহের। (২২:২৯)
ইহাই বিধান এবং কেহ আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত পবিত্র অনুষ্ঠানগুলির সম্মান করিলে তাহার প্রতিপালকের নিকট তাহার জন্য ইহাই উত্তম। তোমাদের জন্য হালাল করা হইয়াছে গবাদিপশু জন্ত-এইগুলি ব্যতীত যাহা তোমাদেরকে শোনান হইয়াছে। সুতরাং তোমরা বর্জন কর মূর্তিপূজার অপবিত্রতা এবং দূরে থাক মিথ্যা কথন হইতে, (২২:৩০)
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁহার রাসূলকে স্বপ্নটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করিয়া দেখাইয়াছেন, আল্লাহ্র ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মস্জিদুল-হারামে প্রবেশ করিবে নিরাপদে- তোমাদের কেহ কেহ মস্তক মুন্ডিত করিবে আর কেহ কেহ কেশ কর্তন করিবে। তোমাদের কোন ভয় থাকিবে না। আল্লাহ্ জানেন তোমরা যাহা জান না। ইহা ছাড়াও তিনি তোমাদেরকে দিয়াছেন এক সদ্য বিজয়। (৪৮:২৭)