এবং স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীমকে তাহার প্রতিপালক কয়েকটি কথা দ্বারা পরীক্ষা করিয়াছিলেন এবং সেইগুলি সে পূর্ণ করিয়াছিল, আল্লাহ্ বলিলেন, ‘আমি তোমাকে মানব জাতির নেতা করিতেছি।’ সে বলিল, ‘আমার বংশধরগণের মধ্য হইতেও?’ আল্লাহ্ বলিলেন, ‘আমার প্রতিশ্রুতি জালিমদের প্রতি প্রযোজ্য নহে।’ (২:১২৪)
যে নিজেকে নির্বোধ করিয়াছে সে ব্যতীত ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ হইতে আর কে বিমুখ হইবে। পৃথিবীতে তাহাকে আমি মনোনীত করিয়াছি; আর আখিরাতেও সে অবশ্যই সৎকর্মপরায়ণগণের অন্যতম। (২:১৩০)
তাহার প্রতিপালক যখন তাহাকে বলিয়াছিলেন, ‘আত্মসমর্পণ কর’, সে বলিয়াছিল, ‘জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট আত্মসমর্পণ করিলাম।’ (২:১৩১)
এবং ইব্রাহীম ও ইয়া‘কূব এই সম্বন্ধে তাহাদের পুত্রগণকে নির্দেশ দিয়া বলিয়াছিল, ‘হে পুত্রগণ! আল্লাহ্ই তোমাদের জন্য এই দীনকে মনোনীত করিয়াছেন। সুতরাং আত্মসমর্পণকারী না হইয়া তোমরা কখনও মৃত্যুবরণ করিও না। (২:১৩২)
ইয়া‘কূবের নিকট যখন মৃত্যু আসিয়াছিল তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে? সে যখন পুত্রগণকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, ‘আমার পরে তোমরা কিসের ‘ইবাদত করিবে?’ তাহারা তখন বলিয়াছিল, ‘আমরা আপনার ইলাহ্-এর এবং আপনার পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইস্মাঈল ও ইসহাকের ইলাহ্-এরই ‘ইবাদত করিব। তিনি একমাত্র ইলাহ্ এবং আমরা তাঁহার নিকট আত্মসমর্পণকারী।’ (২:১৩৩)
সেই ছিল এক উম্মত, তাহা অতীত হইয়াছে। তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহাদের। তোমরা যাহা অর্জন কর তাহা তোমাদের। তাহারা যাহা করিত সে সম্বন্ধে তোমাদের কোন প্রশ্ন করা হইবে না। (২:১৩৪)
তাহারা বলে, ‘ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান হও, ঠিক পথ পাইবে।’ বল, ‘বরং একনিষ্ঠ হইয়া আমরা ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করিব এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।’ (২:১৩৫)
হে কিতাবীগণ! ইব্রাহীম সম্বন্ধে কেন তোমরা তর্ক কর, অথচ তাওরাত ও ইন্জীল তো তাহার পরেই অবতীর্ণ হইয়াছিল? তোমরা কি বুঝ না? (৩:৬৫)
হাঁ, তোমরা তো সেইসব লোক, যে বিষয়ে তোমাদের সামান্য জ্ঞান আছে সে বিষয়ে তোমরাই তো তর্ক করিয়াছ, তবে যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান নাই সে বিষয়ে কেন তর্ক করিতেছ? আল্লাহ্ জ্ঞাত আছেন এবং তোমরা জ্ঞাত নও। (৩:৬৬)
ইব্রাহীম ইয়াহূদীও ছিল না, খ্রিস্টানও ছিল না; সে ছিল একনিষ্ঠ আত্মসমর্পণকারী এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না। (৩:৬৭)
নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে তাহারা ইব্রাহীমের ঘটিষ্ঠতম যাহারা তাহার অনুসরণ করিয়াছে এবং এই নবী ও যাহারা ঈমান আনিয়াছে; আর আল্লাহ্ মু’মিনদের অভিভাবক। (৩:৬৮)
বল, ‘আল্লাহ্ সত্য বলিয়াছেন। সুতরাং তোমরা একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর, সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নহে।’ (৩:৯৫)
তাহার অপেক্ষা দীনে কে উত্তম, যে সৎকর্মপরায়ণ হইয়া আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে? এবং আল্লাহ্ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করিয়াছেন। (৪:১২৫)
আর ইহা আমার যুক্তি-প্রমাণ যাহা ইব্রাহীমকে দিয়াছিলাম তাহার সম্প্রদায়ের মুকাবিলায়; আমি যাহাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। (৬:৮৩)
আর আমি তাহাকে দান করিয়াছিলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব, ইহাদের প্রত্যেককে সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিল; পূর্বে নূহ্কেও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম এবং তাহার বংশধর দাঊদ, সুলায়মান ও আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারূনকেও; আর এইভাবেই সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করি; (৬:৮৪)
এবং যাকারিয়া, ইয়াহ্ইয়া, ‘ঈসা এবং ইল্য়াসকেও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম। ইহারা সকলে সজ্জনদের অন্তর্ভুক্ত; (৬:৮৫)
আরও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম ইস্মাঈল, আল্-য়াসা‘আ, ইয়ূনুস্ ও লূতকে; এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করিয়াছিলাম বিশ্বজগতের উপর প্রত্যেককে- (৬:৮৬)
এবং ইহাদের পিতৃপুরুষ, বংশধর ও ভ্রাতৃবৃন্দের কতককে। আমি তাহাদেরকে মনোনীত করিয়াছিলাম এবং সরল পথে পরিচালিত করিয়াছিলাম। (৬:৮৭)
ইহা আল্লাহ্র হিদায়াত; স্বীয় বান্দাদের মধ্যে যাহাকে ইচ্ছা তিনি ইহা দ্বারা সৎপথে পরিচালিত করেন। তাহারা যদি শির্ক করিত তবে তাহাদের কৃতকর্ম নিষ্ফল হইতই। (৬:৮৮)
আমি উহাদেরকেই কিতাব, কর্তৃত্ব ও নবূওয়াত দান করিয়াছি, অতঃপর যদি ইহারা এইগুলিকে প্রত্যাখ্যানও করে তবে আমি তো এমন এক সম্প্রদায়ের প্রতি এইগুলির ভার অর্পণ করিয়াছি যাহারা এইগুলি প্রত্যাখ্যান করিবে না। (৬:৮৯)
উহাদেরকেই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন, সুতরাং তুমি তাহাদের পথের অনুসরণ কর। বল, ‘ইহার জন্য আমি তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক চাই না, ইহা তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’ (৬:৯০)
যাহারা দীন সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে তাহাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়; তাহাদের বিষয় আল্লাহ্র ইখ্তিয়ারভুক্ত। আল্লাহ্ তাহাদেরকে তাহাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করিবেন। (৬:১৫৯)
কেহ কোন সৎকাজ করিলে সে তাহার দশগুণ পাইবে এবং কেহ কোন অসৎ কাজ করিলে তাহাকে শুধু উহারই প্রতিফল দেওয়া হইবে, আর তাহাদের প্রতি জুলুম করা হইবে না। (৬:১৬০)
বল, ‘আমার প্রতিপালক তো আমাকে সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন। উহাই সুপ্রতিষ্ঠিত দীন, ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।’ (৬:১৬১)
ইব্রাহীম ছিল এক ‘উম্মত’, আল্লাহ্র অনুগত, একনিষ্ঠ এবং সে ছিল না মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত; (১৬:১২০)
সে ছিল আল্লাহ্র অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞ; আল্লাহ্ তাহাকে মনোনীত করিয়াছিলেন এবং তাহাকে পরিচালিত করিয়াছিলেন সরল পথে। (১৬:১২১)
আমি তাহাকে দুনিয়ায় দিয়াছিলাম মঙ্গল এবং আখিরাতেও, সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম। (১৬:১২২)
এখন আমি তোমাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করিলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর; এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। (১৬:১২৩)
এবং জিহাদ কর আল্লাহ্র পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করিয়াছেন। তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেন নাই। ইহা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করিয়াছেন ‘মুসলিম’ এবং এই কিতাবেও; যাহাতে রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হয় এবং তোমরা সাক্ষীস্বরূপ হও মানব জাতির জন্য। সুতরাং তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহ্কে অবলম্বন কর; তিনিই তোমাদের অভিভাবক, কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি! (২২:৭৮)
তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করিয়াছেন দীন যাহার নির্দেশ দিয়াছিলেন তিনি নূহ্কে, আর যাহা আমি ওহী করিয়াছি তোমাকে এবং যাহার নির্দেশ দিয়াছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে, এই বলিয়া যে, তোমরা দীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং উহাতে মতভেদ করিও না। তুমি মুশরিকদেরকে যাহার প্রতি আহ্বান করিতেছ তাহা উহাদের নিকট দুর্বহ মনে হয়। আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা দীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তাঁহার অভিমুখী, তাহাকে দীনের দিকে পরিচালিত করেন। (৪২:১৩)
উহাদের নিকট জ্ঞান আসিবার পর কেবল পারস্পরিক বিদ্বেষবশত উহারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। এক নির্ধারিত কাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার প্রতিপালকের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকিলে উহাদের বিষয়ে ফয়সালা হইয়া যাইত। উহাদের পর যাহারা কিতাবের উত্তারাধিকারী হইয়াছে তাহারা তো সেই সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রহিয়াছে। (৪২:১৪)
সুতরাং তুমি উহার দিকে আহ্বান কর ও উহাতেই দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাক যেইভাবে তুমি আদিষ্ট হইয়াছ এবং উহাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করিও না। বল, ‘আল্লাহ্ যে কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন আমি তাহাতে বিশ্বাস করি এবং আমি আদিষ্ট হইয়াছি তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করিতে। আল্লাহ্ই আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ-বিসম্বাদ নাই। আল্লাহ্ই আমাদেরকে একত্র করিবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁহারই নিকট।’ (৪২:১৫)
আল্লাহ্কে স্বীকার করিবার পর যাহারা আল্লাহ্ সম্পর্কে বিতর্ক করে তাহাদের যুক্তি-তর্ক তাহাদের প্রতিপালকের দৃষ্টিতে অসার এবং উহারা তাঁহার ক্রোধের পাত্র এবং উহাদের জন্য রহিয়াছে কঠিন শাস্তি। (৪২:১৬)
আল্লাহ্ই অবতীর্ণ করিয়াছেন সত্যসহ কিতাব এবং তুলাদন্ড। তুমি কি জান, সম্ভবত কিয়ামত আসন্ন? (৪২:১৭)
তোমাদের জন্য ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারীদের মধ্যে রহিয়াছে উত্তম আদর্শ। যখন তাহারা তাহাদের সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, ‘তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাহার ‘ইবাদত কর তাহার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হইল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যদি না তোমরা এক আল্লাহ্তে ঈমান আন।’ তবে ব্যতিক্রম তাহার পিতার প্রতি ইব্রাহীমের উক্তি: ‘আমি নিশ্চয়ই তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিব; এবং তোমার ব্যাপারে আল্লাহ্র নিকট আমি কোন অধিকার রাখি না।’ ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারিগণ বলিয়াছিল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমারই উপর নির্ভর করিয়াছি, তোমারই অভিমুখী হইয়াছি এবং প্রত্যাবর্তন তো তোমারই নিকট। (৬০:৪)